শিক্ষার্থীর সাথে বাসচালকের বিরোধ এবং ছাত্রত্ব বাতিল

 

একজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও দুজনের নিকট থেকে জবাব চেয়ে নোটিশ দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচিত কাজটিই করেছেন। কেননা, যে শিক্ষার্থী বাসচালককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে তার ছাত্রত্ব আর যাই হোক সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনে থাকা কতোটুকু সমীচীন তা প্রশ্নবিদ্ধ বটে। যদিও কোনো ঘটনা একেবারে এমনি এমনি ঘটে না। প্রতিটি ঘটনার আড়ালেই ঘটনা থাকে। তারপরও ভুল করলে শিক্ষার্থীকে সুধরে নেয়াটাও শিক্ষকমণ্ডলীর দায়িত্বেরই অংশ।

অবশ্যই শিক্ষা শুধু বিলাসী জীবনযাপনের মতো ভালো মাইনের আয়েশি চাকরির জন্য নয়, নিজেকে গড়ার জন্য। তাই যদি হয় তাহলে অন্যের অন্যায়কে নিজের দক্ষতায় সুধরে সুপথে নেয়ার বদলে পেশিশক্তি প্রয়োগ তথা পশুত্বের প্রকাশ কেন? শিক্ষায় ঘাটতি নাকি নিজেকে বেপরোয়া করে বাড়তি সুবিধা নেয়ার চেষ্টা? অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাগবিতণ্ডা একপর্যায়ে চড় থাপ্পড়ে পৌঁছায় বলে দাবি করার রেওয়াজ থাকলেও সেটাও যে অন্যায় তা অবশ্যই অস্বীকার করা যায় না। কেননা, একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আর একটি অন্যায় করার সুযোগ নেই। সেটা সভ্যতাও নয়। শিক্ষার্থীদের বহন করা বাসচালকের অন্যায় থাকলে কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ করে প্রতিকার প্রার্থনা করাটাই ছিলো সভ্যতা। যদি নালিশ করেও কর্তৃপক্ষের নড়নচড়ন পরিলক্ষিত না হয়? বিশৃঙ্খলা অনিবার্য হওয়া অমূলক নয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে নিশ্চয় তেমনটি নয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠন-পাঠনের পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখতে শুধু শিক্ষার্থী নয়, সংশ্লিষ্ট সকলকেই আন্তরিক হতে হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের সময়মতো আনা-নেয়ার কাজে নিয়োজিতদের বিনয়ী আচরণ আশা করেন সকলে। বাসচালকের সাথে শিক্ষার্থীর বিরোধ তদন্তের দাবি রাখে। শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল সাময়িক। এতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে ছড়াবে সুবাতাস। সুধরোবে সে। ওদের সুন্দর জীবনের সোপান মসৃণ করার দায়িত্ব শিক্ষক অভিভাবক সকলের।