চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর কলোনিপাড়া বাজার ওয়াক্তি মসজিদের জায়গা নিয়ে আদালতে পিটিশন মামলা : ১৪৫ ধারা জারি

 

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর কলোনিপাড়া বাজার ওয়াক্তি মসজিদের জায়গা নিয়ে আদালতে পিটিশন মামলা দায়ের করেছেন মসজিদ কমিটির সদস্য সাইদ। আদালত আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয়পক্ষকে নালিশি জমিতে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের বেগমপুর ৬৪ নং মৌজায় ১ নং খতিয়ানের ১৪৪৪ দাগে ৩ দশমিক ৬২ শতক জেলা পরিষধের খাসজমি অবস্থিত। ১৯৮৫ সালের দিকে খাসজমির দক্ষিণ মাথায় এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দ্বীনশিক্ষা এবং গরিব মানুষের বিনামূল্যে হোমিওচিকিৎসা দেয়ার জন্য নেদায়ে ইসলাম নামের একটি সংগঠন টিনশেড দিয়ে একটি ঘর তৈরি করে। শিক্ষার প্রসার বাড়তে থাকলে সংগঠনের নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় ১৯৮৯ সালের ২৬ নভেম্বর গ্রামের ইলিয়াস সরকারের স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম সংগঠনের নামে ঘরের নিচে নিজ জমি থেকে ৮ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেন। ১৯৯০ সালের দিকে ঝড়-বৃষ্টিতে ওই ঘর নষ্ট হয়ে গেলে সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯১ সালে জেলা পরিষদের ৩.৬২ শতক খাস জমিতে এলাকাবাসী সাপ্তাহিক হাট বসায়। সেই সাথে ওই স্থানে একটি ওয়াক্তিয়া মসজিদ তৈরি করেন। দীর্ঘদিন বিষয়টি নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা না থাকলেও সম্প্রতি নেদায়ে ইসলাম নামের ওই সংগঠন পুনরায় ওই জমিতে নতুন করে বাঁশকাঠ দিয়ে মসজিদ কমিটির সাথে পরামর্শ করে ঘর তৈরি করতে যায়। যেখানে মসজিদ কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দীন ৫ হাজার টাকাও দেয়। সংগঠনের লোকজন গ্রাম থেকে বাঁশকাঠ চেয়ে এনে ঘর তুলতে গেলে মসজিদ কমিটির সদস্য উমর আলী শেখের ছেলে সাইদ হাসান নেদায়ে ইসলাম সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সামছীদ্দন ফরাজি এবং ছেলে কলোনিপাড়া বাজার কমিটির সভাপতি মাসুদ রানার নামে চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গতপরশু বুধবার বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশ উভয়পক্ষকে নালিশি জমির ওপর প্রবেশ না করার জন্য ১৪৫ ধারার নোটিশ দিয়ে অবহিত করে যান এবং সেই সাথে আগামী ৪ জানুয়ারি জমির কাগজপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বলে যান। মামলার বাদী সাইদ বলেন, মাসুদ রানা মসজিদে তালা লাগিয়ে দিতে চেয়েছে তাই মামলা করেছি।

অপরদিকে মাসুদ রানা বলেন, আমি মসজিদে তালা লাগানোর কথা বলেনি। বলেছি মসজিদে বসে কোনো মিটিং করা হলে তালা লাগিয়ে রাখা হবে, নামাজের আধাঘণ্টা আগে খুলে দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে যাতে করে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না হয়। আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কারণ আমি বাজার কমিটির সভাপতি হিসেবে কোনো পক্ষপাতিত্ব করতে পারিনা। এ ব্যাপারে নেদায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক সামছদ্দিন ফরাজি বলেন, উথলীতে সংগঠনের একটি ঘর আছে। যেখানে বেগমপুরের লোকজন গিয়ে বিনামূল্যে চিকিৎসা নেয়। মানুষের কষ্টের কথা ভেবে সংগঠনের জমি বরাবর খাসজমিতে পূর্বের ন্যায় একটি ঘর তুলতে চেয়েছিলাম। যাতে করে পুনরায় দ্বীনশিক্ষা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাটা চালু করা যায়। আর যা কিছু করা হয়েছে মসজিদ কমিটির সাথে বসেই আলোচনা করে করা হয়েছে। এখানে কারো ব্যক্তিগত কোনো স্বার্থ নেই। আমরা চাই মসজিদ এবং নেদায়ে ইসলামের ঘর সহঅবস্থানে থেকে যে যার কার্যক্রম চালিয়ে যাক। কারণ দুটিই আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠান। মসজিদ কমিটির সভাপতি জালাল উদ্দীন বলেন, তারা যেখানে ঘর তুলতে চাইছে মসজিদ এবং অজুখানার মাঝামাঝি জায়গায়। আমরা দায়িত্বে থেকে তা হতে দিতে পারি না।