চলে গেলেন তামিলনাড়ুর ‘আম্মা’ জয়ললিতা

 

মাথাভাঙ্গা মনিটির: চিকিত্সকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ। চলে গেলেন ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনীতিক ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতা। রাজ্যের মানুষের কাছে ‘আম্মা’ নামেই পরিচিত। তামিল ভাষায় যার অর্থ ‘মা’। তিনি এআইএডিএমকে প্রধান ছিলেন। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় তার মৃত্যুর খবর জানান রাজ্যের রাজধানী চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিত্সকরা। রাজ্যজুড়ে স্বজন হারানো শোক। ৬৮ বছর বয়সী জয়ললিতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ বহু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং এমপিরা। শোক প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা করুণানিধি। তামিলনাড়ুতে তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর শ্বাসকষ্ট এবং ডিহাইড্রেশনের সমস্যা নিয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তবে সপ্তাহ খানেক চিকিত্সার পরও বিশেষ কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সসক দলকে নিয়ে আসা হয়। তাদের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় রোববার। রোববার সন্ধ্যায় মারাত্মক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ভর্তি করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালের আইসিইউতে। অবস্থার অবনতি হতে থাকায় রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। অ্যাপোলোর বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দল ছাড়াও জয়ললিতার চিকিত্সাহয় চেন্নাই চলে যান এআইএমএস এর একটি বিশেষজ্ঞদল। পরামর্শ নেয়া হয় লন্ডনের ডাক্তারদেরও। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম জানায়, গতকাল বিকেলে দু’টি তামিল টেলিভিশন চ্যানেলে সমপ্রচারিত খবরের জেরে এবং জয়ললিতার দল এআইএডিএমকে সদর দফতরে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকতে দেখে দাবানলের মতো ছড়ায় জয়ললিতার মৃত্যুর খবর। পরে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মুখ্যমন্ত্রী বেঁচে আছেন। তবে তার জীবন সংকটাপন্ন। মৃত্যুর খবরে বন্ধ হয়ে যায় কোনো কোনো এলাকার বাস সার্ভিস।  ১৯৪৮ সালে জয়ললিতা জন্মগ্রহণ করেন। গোড়া থেকেই নিজের কাজের জন্য তামিলনাড়ুর মানুষের মনে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিলেন জয়ললিতা। প্রথম জীবনে অভিনয় এবং পরবর্তী সময়ে রাজনীতি- দুই মাধ্যমেই তামিলনাড়ুর সাধারণ মানুষের ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অভিনয় জীবনে ১৪০টিরও বেশি তামিল, তেলুগু এবং কন্নড় ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার রাজ্যসভার সদস্যপদ পেয়েছিলেন জয়া। তখন থেকেই পাকাপাকিভাবে রাজনীতির হাতেখড়ি। শোনা যায়, তামিলনাড়ুর বিখ্যাত অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ এমজি রামচন্দ্রের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েই রাজনীতিতে এসেছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু এরপর থেকে পাকাপাকিভাবে রাজনীতির হয়েই থেকে গিয়েছেন নেত্রী। ১৯৮২ সালে প্রথমবার এআইএডিএমকের সদস্যপদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। আর এরপর ধীরে ধীরে বহু বাধা অতিক্রম করে শেষটায় এআইএডিএমকে’র সভাপতি পদে আসীন হন নেত্রী। ১৯৯১ সালে প্রথমবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর বহুবার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তামিলনাড়ুর মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।