বোমা তৈরির কথা বেলে ডেকে নিয়ে খুন? সন্দেহের দৃষ্টিতে সরোজগঞ্জ এলাকার সন্ত্রাসী

VLUU L100, M100 / Samsung L100, M100

চুয়াডাঙ্গা ডিঙ্গেদহের মাঠ থেকে উদ্ধার করা ক্ষত-বিক্ষত লাশ তার নিজ গ্রাম হরিণাকু-ুর কেষ্টপুরে দাফন

 

স্টাফ রিপোর্টার: না, ডিঙ্গেদহ মানিকদিহির মাঠ থেকে উদ্ধার করা ক্ষত-বিক্ষত লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করতে হয়নি। তাকে তার নিজ গ্রাম ঝিনাইদহের হরিণাকু-ুর কেষ্টপুর জোয়ার্দ্দারপাড়ার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহ দেখে তার পিতা লুৎফর রহমান শনাক্ত করে বলেন, এটা আমারই ছেলে মনিরুল ইসলাম ওরফে মইনুদ্দিনের লাশ।

চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের জের ধরে তারই দলের লোক হত্যা করেছে? নাকি প্রতিপক্ষের অস্ত্রধারীরা তাকে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ডিঙ্গেদহ মানিকদিহির ভরাডুবির বাগানের মাঠের কলাবাগানে ফেলে রাখা হয়। সূত্র বলেছে, মইনুদ্দিন বোমা তৈরিতে পরাদর্শী ছিলো। বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে তার ডান হাতটি ইতঃপূর্বে ক্ষত-বিক্ষত হয়। আঙুল উড়ে যায়। তাকে বোমা বানানোর জন্য ডেকে নিয়ে পরিচিত সন্ত্রাসীরই হত্যা করেছে বলে চুয়াডাঙ্গার চারমাইল এলাকায় জোর গুঞ্জন রয়েছে। সরোজগঞ্জ এলাকার এক চিহ্নিত সন্ত্রাসীর নামও উঠে এসেছে আলোচনায়। নামের অদ্যাক্ষর ’ও’র সাথে মাঝে মাঝেই মইনুদ্দিনকে ঘুরতে দেখা যেতো। পরশু রোববার বিকেলে লাশ উদ্ধারের পর সরোজগঞ্জ চার মাইল এলাকার কেউ কেউ চিনলেও তারা মুখ খুলতে সাহস পায়নি। ফলে অজ্ঞাত পরিচয়ের বলেই মৃতদেহ রাখা হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে। খবর পেয়ে গতকাল সোমবার সকাল তার পিতা হরিণাকু-ুর কেষ্টপুর জেয়ার্দ্দারপাড়ার লুৎফর রহমান কয়েকজনকে সাথে নিয়ে হাজির হন লাশের পাশে। পুলিশ নিহত মইনুদ্দিনকে এলাকার চিহ্নিত বোমাবাজা সন্ত্রাসী বলে দাবি করলেও তার পিতা লুৎফর রহমান বলেছে, এক সময় চরমপন্থি পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির সাথে থাকলেও পরে ভালো হওয়ার জন্য যাশোরের চৌগাছায় থাকতো। কাপড়ের ব্যবসা করতো। স্ত্রী সালমা ও তার দু মাসর শিশুকন্যা মোহনা কৃষ্ণপুরেই থাকে।

পুলিশ বলেছে, হরিণাকু-ু থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ থানায় রয়েছে দুটি হত্যা মামলা। চিহ্নিত সন্ত্রাসী মইনুদ্দিন (৩০) চুয়াডাঙ্গার কুতুবপুর, হরিণাকু-ুর তাহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় ঘুরতো। একের পর এক অপরাধ করার পাশাপাশি বোমা তৈরি করে বিভিন্ন এলাকার সন্ত্রাসীদের মাঝে বিক্রিও করতো। বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণে হাতের আঙুল উড়ে যায়। পুলিশ এ দাবি করলেও তার পিতা অবশ্য বলেছে, দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাতের মধ্যে পচন ধরেছে। এ  কারণেই পাসপোর্ট করে ভারতে যাওয়ার জন্য টাকা জোগাড় করে। ওই টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্যই সস্ত্রাসীরা তাকে কাছে ডেকে নিয়ে হত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। খুনিচক্র ধরতে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। হরিণাকু-ু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাতাব উদ্দীন জানান, নিহত মঈনের বিরুদ্ধে হরিণাক-ু থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা রয়েছে। অপরদিকে ঝিনাইদহ সদর থানায়ও তার বিরুদ্ধে ভূইয়াপাড়ার আজিজুল এবং পান্তাপাড়ার সিরাজুল হত্যা মামলা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছ্।ে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে খুন হওয়া মঈন হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন না হওয়ায় এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। একি নিজ গ্রুপের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে, না প্রতিপক্ষের জিঘাংসার বলি হলো মঈন। তবে পারিবারিক সূত্র প্রতিপক্ষের হাতে খুন হওয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। এছাড়া সাম্ভব্য আরো সকল বিষয় মাথায় রেখে ইতোমধ্যে তদন্তে মাঠে নেমেছে পুলিশ। তদন্ত শেষে মঈন হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন হবে বলে আশা করছে সচেতন নাগরিক সমাজ।