ঘুষ গ্রহণ বন্ধ করুন নইলে কঠিন পরিণতি : দুদক চেয়ারম্যান

 

স্টাফ রিপোর্টার: যারা ঘুষ নেন তাদের সতর্ক করে কঠিন পরিণতির হুমকি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ঘুষ দুর্নীতি প্রতিরোধের ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এ জন্য আগামীতে ফাঁদে পা দিয়ে ধরা পড়ে মামলায় জড়ানোর ঘটনা বাড়বে। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি দুদকের ২০১৬ সালের কার্যক্রম ও ২০১৭ সালের পরিকল্পনা সাংবাদিকদের জানান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরার ঘটনায় ২০১৬ সালে ১৩টি মামলা হয়। এটা যথেষ্ট কার্যকর, তাই ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরা ও মামলার বিষয়টি চলতি বছর বেগবান করা হবে। চলতি বছরে দুর্নীতিপ্রবণ দফতরগুলোতে বিশেষ নজরদারির বিষয়টি এবার দৃশ্যমান হবে। এছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিশ্চিত করতে প্রতি মাসে দুদকের উদ্যোগে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৩টি করে গণশুনানির ব্যবস্থা করা হবে। দুদক চেয়ারম্যান জানান, সংস্থাটির কার্যক্রম গতি আনতে হালকা আগ্নেয়াস্ত্র সজ্জিত এক আলাদা ইউনিট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য বিষয়ে নজরদারি করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, দুদকের কাছে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি বাণিজ্য হচ্ছে বলে দুদকের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এজন্য সম্প্রতি ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে দুদক তলব করেছে। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তীতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কেননা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হলে সামগ্রিক দুর্নীতি কোনোভাবেই রোধ করা যাবে না।

তিনি আরো জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ে দেশের প্রতিটি জেলার যে কোনো ১টি উপজেলায় ১টি বালিকা বিদ্যালয় এবং একটি বালক বিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ‘সততা স্টোর’ চালু ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে দুদক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। মানুষের মধ্যে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে বছরে একবার প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ১টি করে হাইস্কুলে সিপিসি এবং সততা সংঘের সমন্বয়ে ‘সততা মেলা’ আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে ইকবাল মাহমুদ জানান, দুদক ২০১৬ সালে ১২ হাজার ৫৬৮টি অভিযোগ পায়। এর মধ্যে অনুসন্ধানের জন্য ১ হাজার ৫৪৩টি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়। প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয় ৫৪৩টি। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দুদকে বেশি অভিযোগ আসে। কিন্তু অধিকাংশ অভিযোগ দুদকের তফসিল বহির্ভূত হওয়ায় তা অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা ও দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং দুদকের অন্য কর্মকর্তাবৃন্দ।