দু ভাইয়ের আঁইল ঠেলাঠেলি : ছোটভাইর কোদালের কোপে বড়ভাই নিহত

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার সাহেবপুর মাঠে পৈত্রিক জমি নিয়ে বিরোধের জের

আসমানখালী প্রতিনিধি/আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বড়ভাই কলম উদ্দীনকে কোদালের কোপে খুন করে নিবিঘেœ পালিয়েছে ছোটভাই লালন ওরফে নালন (৩৫)। গতকাল বুধবার সাড়ে সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গার পল্লি সাহেবপুরের দাঁতভাঙার খাল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
পৈত্রিক পাওয়া শরীকি জমির আঁইলঠেলা নিয়ে বাগবিত-ার এক পর্যায়ে ভুঁইপাকানোর কোদাল দিয়ে বড় ভাই কলমের মাথায় কোপ মারে লালন ওরফে নালন। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়ে। অবস্থা বেগতিক দেখে মাঠ ছাড়ে ঘাতক। তবে সে সরে পড়ার সময় মাঠের অন্য কৃষকদের বলে, ভাই কলমকে মেরেছি। তোমরা দেখো মরে গেছে কি-না।
চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার বড় গাংনী ইউনিনের সাহেবপুর গাংপাড়ার মৃত আজমোত আলীর ৪ ছেলের মধ্যে কলম উদ্দীন তৃতীয়। লালন ওরফে নালন ছোট। ভাইগুলো সকলেরই পৃথক সংসার। পৈত্রিক জমা-জমি আনেক আগেই ভাগ হয়েছে। গ্রাম সংলগ্ন সোহাগমোড়ের দাঁতভাঙা খাল মাঠের জমি কলমের মধ্যে দু কাঠা জমি বেশি রয়েছে বলে অভিযোগ ছোটভাই লালনের। কলম আলী ১৩ কাঠা আর লালন ১১ কাঠা পাশাপাশি জমিতে আবাদ করে। গতকাল দুভাইয়ের জমিতে ধানের পাতু লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করছিলো। এ সময় দু ভাইয়ের মধ্যে জমির আঁইলঠেলা নিয়ে বাগবিত-া শুরু হয়। এক পর্যায়ে লালন তার হাতে থাকা কোদাল দিয়ে ভাই কলমের মাথায় কোপ বসিয়ে দেয়। রক্তে জমি ভিজে লাল হয়ে যায়। মাঠের কৃষকরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে। বাড়িতে খবর দেয়। পরিবারের লোকজন তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক কলম উদ্দীনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন হাসপাতালে ছুটে যান। তিনি ঘটনার বর্ণনা শোনেন। তাৎক্ষণিকভাবে ঘাতক ভাইকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।
কলম আলীর রয়েছে দু ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে।  দু ছেলে সিজার ও পিজার নাবালোক। এদের নিয়ে সদ্য বিধোবা হওয়া অঞ্জনা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, ওই মাঠের দু কাঠা জমি বেশি রয়েছে বলে বহুদিন ধরেই লালন অভিযোগ করে। ভাগে বেশি থাকা জমি ফেরত দেয়ারও কথা। এরই মাঝে লালন যে এতোবড় সর্বনাশ করবে কে জানতো? স্বামীর হত্যকারীর বিচার চান তিনি। তবে কলম উদ্দীনের অপর দু ভাই এ বিষয়ে তেমন কোনো মন্তব্য করেননি। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা হয়নি। খুনি লালনকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ। গতকালই দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালমর্গে কলম উদ্দীনের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে নিজ গ্রামে নেয়া হয়। নিকটজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। গতরাত ৮টার দিকে গ্রাম্য কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করা হতে পারে।