চাকরিজীবী ও জনপ্রতিনিধিদের বেতনভাতা বৃদ্ধি পেলেও বাড়েনি গ্রাম পুলিশের

 

 

মানবেতর জীবনযাপন : প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা

বখতিয়ার হোসেন বকুল: কথায় আছে পেটে খেলে পিঠে সয়। গ্রাম পুলিশদের ক্ষেত্রে এর কিছুটা হলেও ব্যতিক্রম লক্ষ্যনীয়। রাত জেগে লাশ পাহারা থেকে শুরু করে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা, রাতের বেলায় পুলিশদের সাথে গিয়ে আসামিদের বাড়ি চিনিয়ে দেয়া, প্রতি সপ্তায় থানায় হাজিরা দেয়াসহ ইউনিয়ন পরিষদে ৫ দিন দায়িত্ব পালন করা। এমনকি মাঠ থেকে মরা লাশ ঘাড়ে করে রাস্তায়ও তুলে এনে দিয়ে হয়। এক কথায় হ্যান কাজ নেই যে তাদের করতে হয় না। এভাবেই রাতদিন ২৪ ঘণ্টা তাদের দিয়ে ডিউটি করানো হলেও বেতনভাতা যা দেয়া হয় তা দিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানোতো দূরের কথা সংসার চালানোই দ্বায়। কাজের ক্ষেত্রে পান থেকে চুন খসার জো নেই। একদিকে চেয়ারম্যান-মেম্বার অন্যদিকে থানা পুলিশের বকুনি যেন তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। ইউনিয়ন পরিষদের সচিব, চেয়ারম্যান, শিক্ষকসহ সকল চাকরিজীবী এবং জনপ্রতিনিধিদের বেতনভাতা বৃদ্ধি পেলেও ভাগ্যের ছিকে ছেড়েনি গ্রাম পুলিশদের। পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো মতে দু বেলা দু মুঠো খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাদের।

দামুড়হুদা উপজেলা গ্রাম পুলিশের সভাপতি বিকাশ চন্দ্র দাস জানান, এ উপজেলায় মোট ৬৪ জন গ্রাম পুলিশ রয়েছে। এরমধ্যে দফদারদের দেয়া হয় ৩ হাজার ৪শ টাকা আর মহল্লাদারদের (চৌকিদার) দেয়া হয় ৩ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার সকলের বেতনভাতা বৃদ্ধি করলেও ভাগ্যের ছিকে ছেড়েনি আমাদের। তিনি অতি দুঃখের সাথে বলেছেন বর্তমান যুগে ৩ হাজার টাকায় কী হয়? তাছাড়া গ্রাম পুলিশরা বেশিরভাগই হতদরিদ্র। গ্রাম পুলিশ শরীফুল, সুজাউদ্দীন, আজিজ, বিজয়সহ বেশকয়েকজন অভিন্ন ভাষায় বলেছেন, সরকার হতদরিদ্রদের ১০ টাকা কেজি চাল দিচ্ছে অথচ আমাদের দেয়া হয় না। আমরা শুধু নামেই পুলিশ। একজন সুইপারের যে সুযোগ সুবিধা আছে সেটিও আমাদের নেই। এক কথায় আমাদের কোনো সুযোগ সুবিধাও নেই কোনো মূল্যায়নও নেই।

উপজেলা গ্রাম পুলিশের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, নির্বাচনের ডিউটি পালন করলে পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা ঝুঁকিভাতা পাই। অথচ আমাদের দেয়া হয় না। সরকার বছরে দু বার পোশাক দিয়েই খালাস। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে আছি দু একজন চেয়ারম্যান ছাড়া কেউ খোঁজও নেয় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে এদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করতে আমাদেরকেও এগিয়ে নিতে হবে। কারণ আমরাও তো এদেশেরই নাগরিক। বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে গ্রাম পুলিশদের বেতনভাতা বৃদ্ধি করাটা একান্তই অপরিহার্য। তাছাড়া এটা আমাদের ন্যায্য দাবিও বটে। তাই আমরা সকল গ্রাম পুলিশের বেতনভাতা বৃদ্ধির জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।