সাবধান! আশপাশেই ঘুর ঘুর করছে প্রতারক

যার তার কাছে বা যেখানে সেখানে সাইনবোর্ড সর্বশ্ব কোনো প্রতিষ্ঠানে অর্থলগ্নি মানেই বড় ধরনের ঝুঁকি। এ ধরনের ঝুঁকি নিয়ে অধিকাংশকেই প্রতারিত হতে হয়। তারপরও লোভে পড়ে অনেকেই অর্থলগ্নি করে পথে বসেন। সম্প্রতি কোটচাঁদপুরের সেই আলোচিত হুন্ডি কাজল সিন্ডিকেটের আদলে গ্রামে-গঞ্জে অনেকেই নগদ টাকা জমা নিয়ে মোটা অঙ্কের লাভের টোপে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যেই মোটা অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপন করেছে বলে খবরও পাওয়া গেছে। পত্রস্থও হচ্ছে এসব খবর।
প্রতারক বা প্রতারকচক্রের প্রতারণার মূলমন্ত্র বিশ্বাস স্থাপনের মতো ছদ্মবেশ ও লোভ। ঠিকমতো লোভের টোপ দিতে পারলেই ওদের পাতা ফাঁদে হুড়মুড়িয়ে পড়ে সরলসোজা মানুষ। শুধু সরল-সোজাই নয়, অতিচালাককেও প্রতারিত হয়ে হাই হাই করতে দেখা যায়। যেহেতু প্রতারকচক্র প্রতারণার ফাঁদ পেতে সফল হয়, সেহেতু তাদের অপতৎপরতা বন্ধ হয় না। বরঞ্চ প্রতারণা করার ফাঁদের ধরন-বরণ বদলে আগ্রাসী হয়ে ওঠে। তা না হলে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রকাশ্যেই কি আর ডেসটিনি-২০০০ হাতিয়ে নিতে পেরেছে? কোটচাঁদপুরের বহুল আলোচিত কাজল সিন্ডিকেটের অর্থবাণিজ্যের আড়ালে শুধু প্রতারণাই ছিলো না, টাকা নিয়ে টাকার লাভ গুনতে বোকারাম জড়িয়েছিলো ঋণের জালে। পালানোর পথ না পেয়ে শেষ পর্যন্ত হাজতের ভাত খেতে হয়েছে। আর তার কাছে লগ্নি করে অর্থ হারিয়ে পথে বসতে হয়েছে অসংখ্য লগ্নিকারীকে। সম্প্রতি তারই আদলে লাখে প্রতিমাসে ১০ হাজার লাভের টোপে অর্থলগ্নি নিয়ে কয়েক মাস কারবার চালালেও হুট করে আত্মগোপনের পথ খুঁজছে বহু প্রতারক। আর সাইনাবোর্ড ঝুলিয়ে নানা নামে বহুমুখি সমবায় সমিতি বলে অল্প জামানতে স্বল্পসুদে মোটা অঙ্কের ঋণের টোপটাতো অনেকটাই পুরোনো হয়ে গেছে। তবু এ ধরনের প্রতারণা বন্ধ হয়নি। আর গ্রাম্য মহাজন সুদ-বাণিজ্য? সেটা এখন পানহাট থেকে শুরু করে শাড়ি-কাপড়ের বাজারেও বিদ্যমান। মোবাইলফোনে মোটা অঙ্কের লটারি বাধার কথা বলে বা জিনের বাদশা সেজে রাতারাতি গুপ্তধনের সন্ধান দেয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেয়া তো চলছেই।
প্রতারণা পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে সর্বসাধারণকেই সর্বাধিক সচেতন হতে হবে। আশপাশেই ঘুর ঘুর করে প্রতারকচক্র। সুযোগ বুঝেই বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদটা সামনে মেলে ধরে। ওই ফাঁদে পা দিলেই যে সর্বনাশ তা বুঝতে বুঝতে বড় দেরি হয়ে যায়। অনেকে প্রতারিত হয়েও লজ্জায় মুখ খোলেন না। কেউ কেউ মুখ খুললেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে তেমন আগ্রহী হননা। তাছাড়া প্রতারকদের অধিকাংশই প্রমাণ লোপাটেও পারদর্শী। ফলে সহজেই পার পেয়ে যায় ওরা। ফলে সচেতনতার আলো ছড়ানো জরুরি।