সামনে আসা সুযোগগুলো যে হেলায় হারিয়েছে বাংলাদেশ

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মাহমুদউল্লাহর আউটের পরই ত্বরান্বিত হলো হারটা। তবুও সামান্য আশা জাগিয়েছিলো বাংলাদেশের শেষ তিনটি উইকেট জুটি। ‘আশা’ বলতে ড্র। না, সেটি হয়নি। শেষ তিন ব্যাটসম্যানের ২৪ ওভারের লড়াইয়ের সমাপ্তি তাসকিন আহমেদের এলবিডব্লু  হওয়ার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ হায়দরাবাদ টেস্ট হারল ২০৮ রানে। ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ একেবারে শূন্য হাতে ফিরছে না হায়দরাবাদ থেকে। এই টেস্টে ভারতের ৬৮৭ রানে পিষ্ট হয়ে আগেই আত্মসমর্পণ করেননি মুশফিকরা। ভারতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়ক বলেছিলেন, পাঁচ দিন সমান লড়াই করতে চান। এই লক্ষ্যটা কিন্তু পূরণ হয়েছে। ম্যাচটা প্রায় শেষ সেশন পর্যন্ত নিয়ে যেতে পেরেছে বাংলাদেশ। চতুর্থ ইনিংসে ভারতের মাটিতে অশ্বিন-জাদেজার স্পিনের সামনে ১০০ ওভার ব্যাট করাটাও কম কৃতিত্বের নয়।

বিরাট কোহলির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছিলো। সপ্তম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ আর সাব্বির রহমানের ব্যাটে প্রতিরোধটা ভালোই গড়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু সেই প্রতিরোধ ভেঙে ভারত-অধিনায়কের মুখে হাসি এনে দেন ইশান্ত শর্মা। ভারতের এই পেসার এলবিডব্লু  করেন সাব্বিরকে। মাহমুমদউল্লাহর সঙ্গে সাব্বিরের জুটিটা ভালোই দাঁড়াচ্ছিলো। ২২ রান করে ফেরেন তিনি। ১৮ ওভার স্থায়ী ৫১ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিটি ভাঙার পরেই স্বস্তি ফেরে ভারতীয় দলে।

সাব্বিরের পর মাহমুদউল্লাহর বিদায়ই পরিষ্কার করে দেয় ম্যাচের গতি-প্রকৃতি, বাংলাদেশের হারটা তখন হয়ে দাঁড়ায় কেবল সময়েরই ব্যাপার। ১৪৯ বলে ৬৪ রান করে ইশান্তের বলে ভুবনেশ্বর কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৯ মাস পর টেস্টে ফিফটি পাওয়া এই ব্যাটসম্যান। এরপরও হায়দরাবাদ টেস্ট ড্র করার ক্ষীণ আশা জাগিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ-কামরুল ইসলাম রাব্বীর অষ্টম উইকেট জুটি। ৬১ বলে ২৩ রান করে মিরাজ ফিরে গেলে কামরুল এক প্রান্ত আগলে রাখেন। ৭০ বলে ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন বাংলাদেশ দলের এই পেসার। এই টেস্ট ড্র করতে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মুশফিকের কাছে আরেকটা লড়াকু ইনিংসের প্রত্যাশা ছিলো বাংলাদেশের। খেলছিলেনও ভালো। মনে হচ্ছিল আরেকটি অধিনায়কসুলভ ইনিংস উপহার দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই মুশফিকের কী যে হলো! রবিচন্দ্রন অশ্বিনের করা আগের বলটিই দারুণ শটে সীমানাছাড়া করেন। পরের বলটি ডাউন দ্য উইকেটে এসে মারতে গিয়ে তুলে দেন আকাশে! মিড অফে ক্যাচটি নিতে ভুল করেননি জাদেজাকে। ধারাভাষ্যকক্ষে রবি শাস্ত্রী মুশফিকের শটটি দেখে শুধু বলতে পারলেন—‘কেন’? টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল ভারতের বিপক্ষে পাঁচটা দিন বাংলাদেশ যে লড়াই করেছে সেটি নিয়ে প্রশংসিত হতেই পারে তারা। কিন্তু মুশফিকের সামনে শাস্ত্রীর তোলা সেই প্রসঙ্গটিই আসছে ঘুরে–ফিরে—এই টেস্টে সামনে আসা সুযোগগুলো যে হেলায় হারিয়েছে বাংলাদেশ।