ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগে ডেপুটেশন বাণিজ্য

 

 

মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে ১৪ জন ডাক্তারকে সদর হাসপাতালে সাময়িক বদলি

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহ স্বাস্থ্য বিভাগে জমজমাট ডেপুটেশন বাণিজ্য চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশ অমান্য করে ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন নিয়োগ করা ১৪ জন ডাক্তারকে সদর হাসপাতালে সাময়িক বদলি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বহুল আলোচিত ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. আবদুস সালাম।

সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্র জানায়,স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব একেএম মুখলেচুর রহমানের স্বাক্ষরে ২০ আগস্ট জারি করা নিয়োগপত্রের ‘ঙ’ নম্বরে উল্লেখ করা হযেছে,মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ব্যতীত নবনিয়োগকৃত কোনো কর্মকর্তাকে দু বছরের পূর্বে অন্য কোনো পদে বা কর্মস্থলে বদলি করা যাবে না। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন এ আদেশ অমান্য করে ২৮ আগস্ট ২১৬৬ ও ২১৬৭নং স্মারকে পৃথক দুটি পত্রে নতুন যোগদান করা ১৪ জন ডাক্তারকে সাময়িকভাবে বদলি করেন। একই পত্রে তাদের সদর হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ দেন। নির্দেশ মোতাবেক ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডা. রুবাইয়াত ইবনে হাসান,কুমড়াবাড়িয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডা. রুবনা পারভীন,সুরাট উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের শাহনেওয়াজ ইবনে কাশেম,দোগাছি ডা. তাসনীমুল খায়ের শোভন,ঘোড়াশাল ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডা. আতাউর রহমান,মহারাজপুরের ডা. অন্তরা রাহুত,সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের ডা. এসএম মাসুদুজ্জামান ও ডা. কামরুন্নাহার এবং একই উপজেলার নলডাঙ্গার ডা. জাহিদুল হাসান,কালীগঞ্জ উপজেলার মালিয়াট ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডা. নাজনীন সুলতানা,মহেশপুর নেপা ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডা. দেবাশীষ রায়,শৈলকুপার কচুয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডা. ইফরাত তাসনীম,সাররুটয়া ডা. ফাহমিদা হক ও শৈলকুপা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শূন্য পদে যোগদান করা ডা. মিথিলা ইসলাম এখন সদর হাসপাতালে কাজ করছেন। উল্লেখ করা ব্যক্তিদের বেশ কয়েকজন স্থানীয় ড্যাব নেতাদের ছেলে-মেয়ে।

সূত্র জানায়,৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৮৩ জন ডাক্তার এ জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৭৫টি শূন্য পদের বিপরীতে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়। পদ খালি না থাকায় ৮ জনকে ওএসডি করা হয়েছে। এরা পর্যায়ক্রমে কাগজপত্রে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত স্ব স্ব কর্মস্থলে যোগদান করেন। একাধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে জানা যায়,তারা নতুন নিয়োগ করা ডাক্তারদের কর্মস্থলে দেখছেন না। অভিযোগ করা হয়েছে,স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের দফতরে যোগসাজশে গোটা দেশের ন্যায় এ জেলায় ডেপুটেশন বাণিজ্য ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

সূত্রমতে সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ কয়েকটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তার যুগ যুগ ধরে ডেপুটেশনে অন্যত্র লোক দেখানো চাকরি করছেন। এরা নাম মাত্র চাকরি করেন। মূলত তারা ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালের স্বনামে বেনামে মালিক।