কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হতে হবে

 

বিভিন্ন সময় অভিযান চালানোর পরও দেশে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন অব্যাহত থাকার বিষয়টি উদ্বেগজনক। বস্তুত একটি চক্র ও অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেই নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হচ্ছে না। গত সোমবার উচ্চ আদালতের এক রায়ে দেশে ২০টি দেশীয় কোম্পানির সব ধরনের ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। আদালতের ওই রায়ে ১৪টি দেশীয় কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উচ্চ আদালতের এ যুগান্তকারী রায়ের পর আর কোনো কোম্পানি যাতে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন করতে না পারে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।

নকল ও নিম্নমানের ওষুধ জনস্বাস্থ্যের ওপর কতোটা মারাত্মক প্রভাব ফেলে তা বহুল আলোচিত। দেশে এতোগুলো প্রতিষ্ঠান কীভাবে নকল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের সুযোগ পেয়েছিলো, তা খুঁজে বের করা দরকার। জীবন রক্ষাকারী যেকোনো ওষুধ উৎপাদনে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদন নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে চলবে এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান উৎপাদন নীতিমালা যথাযথভাবে না মেনেই নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন ও বিপণন করে থাকে। ওষুধ উৎপাদনে যেসব প্রতিষ্ঠান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি, সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালত উল্লিখিত রায় ঘোষণা করেন। এ প্রেক্ষাপটে জনগণ আশাবাদী হয়ে উঠবে, যেসব প্রতিষ্ঠান ভেজাল ও নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন ও বিপণন করে থাকে, কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কারণ ভেজাল খাবার খেয়ে মানুষ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।স্বল্পশিক্ষিত ও অশিক্ষিত মানুষের সরলতার সুযোগে একশ্রেণীর প্রতারক নকল ও নিম্নমানের ওষুধ বিক্রি করে থাকে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে দায়িত্ব পালনকারী স্বাস্থ্যকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলে প্রতারকদের তৎপরতা কমবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের চাহিদা বাড়ছে। দেশে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন পুরোপুরি বন্ধ না হলে ওষুধের আন্তর্জাতিক বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ।

গত সোমবারের রায়ে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ওষুধ কোম্পানিগুলো পুনরায় গোপনে কিংবা অবৈধভাবে ওষুধ উৎপাদনের চেষ্টা করে কি-না, তা মনিটর করে তিন মাস পরপর উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়ছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর যেন এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।