কুষ্টিয়ায় পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় কামাল হোসেন চৌধুরী (৪৫) নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। মৃত্যু রহস্য নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। তার পরিবারের দাবি, ছুটি না পাওয়ায় হতাশা থেকে আত্মহত্যা করেছেন। অপরদিকে পুলিশ বলছে, হাসপাতাল থেকে কর্তৃপক্ষকে কিছু না জানিয়ে সে বাড়িতে চলে যায়। কামাল হোসেন চৌধুরী কুষ্টিয়া শহরের শহিদুল রেজা চৌধুরীর ছেলে। তবে তার স্ত্রী দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস করতেন মিরপুর শহরের বাড়িতে। মেহেরপুর গাংনীর এলাঙ্গি পুলিশ ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন তিনি।

তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মধ্যরাতে কামাল হোসেন মিরপুরের বাড়িতে অনেকগুলো ঘুমের বড়ি সেবন করে। এতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন মিরপুর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে রাতেই নেয়া হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে সে মৃত্যুবরণ করে। পরে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। গতকাল বিকেলে মিরপুর ওয়াপদা কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। নিহতের বোন সীমা চৌধুরী জানান, কামাল দীর্ঘদিন থেকে মেরুদণ্ডের ব্যথায় ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার আশায় ভারতে যাওয়ার জন্য ছুটি চেয়েছিলেন তিনি। ছুটি না মেলায় বিষন্নতা থেকে আত্মহত্যা করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার (ওসি) অপারেশন ওবাইদুর রহমান জানান, মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করতে মরদেহ ময়নাতদন্ত করানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত হাতে পেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়েছে। কামাল হোসেনের মৃত্যু ও পরিবারের দাবি এবং মেহেরপুর জেলা পুলিশের বক্তব্য নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মেহেরপুর পুলিশ লাইনের আরও আনোয়ার হোসেন সদুত্তোর দিতে পারেননি। দায়িত্ব এড়িয়ে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন।

মেহেরপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, এলাঙ্গি ক্যাম্প থেকে বুধবার সকালে অসুস্থজনিত নির্দেশনা (সিক সিসি) নিয়ে মেহেরপুর পুলিশ লাইনে গিয়েছিলেন কামাল হোসেন। আরও অফিসে রিপোর্ট করলে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পুলিশ সদস্যদের জন্য নির্ধারিত চিকিৎসকের কাছে প্রেরণ করা হয়। চিকিৎসক তার মাথাব্যাথা চিহ্নিত করেন। সামান্য অসুখ তাই দু দিন ওষুধ সেবনে সুস্থ হওয়ার কথা বলেন চিকিৎসক। সেমত কামাল হোসেন বুধবার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হাসাপাতালে ছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ জানতে পারেন। ওই সময়ের পর থেকে কখন কিভাবে সে মিরপুরের বাসায় যায় তা কর্তৃপক্ষকে অবগত করেননি। অনুমতি না নিয়েই নিজ দায়িত্বে সে মিরপুর গিয়েছিলেন। তবে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা।