শহীদ মিনারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি : নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত পুলিশ

 

অধিকার আদায়ে প্রাণ হারানো জাতীয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত পুরো দেশ

 

আলম আশরাফ: একুশ একদিকে যেমন মাতৃভাষার স্বীকৃতি আদায়ে জীবন দেয়ার শোক, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা অর্জনের গৌরব। এই শোক আর প্রাপ্তির গৌরবকে বিন¤্র্র স্মরণ করতে প্রস্তুত সারাদেশ। তারই অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আশপাশের এলাকায় আলপনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এদেিক, নির্বিঘেœ দিনটি পালনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। অমর একুশের আগের দিন আজ ২০ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের শহীদ হাসান চত্বর থেকে ঝিনাইদহ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত সিসি ক্যামেরা আওতাভুক্ত করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন সিঙ্গাপুর প্রবাসী হাজি সাহেদুজ্জামান টরিক।

একুশ বাঙালির কমলপদ্মা, চেতনার অগ্নিমশাল। বাহান্নোর ২১ ফেব্রুয়ারিতে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ে প্রাণ হারানো জাতীয় শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত পুরো দেশ। ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হচ্ছে শহীদ বেদি। শহীদের বুকের তাজা রক্তের প্রতিচ্ছবি হিসেবে রক্তিম রঙে রাঙানো হচ্ছে শহীদ মিনারের পাদদেশ।

চুয়াডাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, একুশ বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রথম ভীত। দিবসটি পালন উপলক্ষে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে শাদা পোশাকে নিরাপত্তা কর্মী। এছাড়া পুরো এলাকা জুড়ে থাকবে সিসি ক্যামেরার আওতায়।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযানে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আজ সোমবার জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়কসহমূহকে বাংলা বর্ণমালা সংবলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করার জন্য পৌর মেয়রকে জানানো হয়েছে। রাত ১২টা ১ মিনিটে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজে অবস্থিত কেন্দ্রী শহীদ মিনারে  পুষ্পস্তবক অর্পণ। কাল সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, বেসরকারি ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত অবস্থায় রাখার জন্য স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান প্রধান ও ভবন মালিকদেরকে অনুরোধ করা হয়েছে। সকাল পৌনে ৭টায় প্রভাতফেরি। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারে আসতে হবে। প্রভাতফেরির পর সকাল ৯টায় কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ১০টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে হামদ-নাত ও কেরাত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টায় জেলা শিশু একাডেমি চত্বরে শিশুদের কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত, চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, বাদ জোহর সকল মসজিদ ও মাদরাসায় শহীদদের রূহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত। সুবিধামতো সময়ে সকল মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ প্রার্থনা। সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদকে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করে যথাযথ মর্যাদায় পালনে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এছাড়া স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ নিজ নিজ উদ্যোগে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণপূর্ব যথাযথ মর্যাদায় পালনে অনুরোধ জানানো হয়েছে।