চুয়াডাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের বদলি আদেশ স্থগিত

( হাফ কলামে ছবি দিলে ভালো হয়)

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনর বদলি আদেশে স্থগিত করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলাকে মাদকমুক্ত করার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে পুরোদমে মাঠে নামা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনের বদলির আদেশ স্থগিত হওয়ার খবরে মাদকবিরোধী অনেকের মধ্যেই স্বস্তি ফেরে।

জানা গেছে, গত কয়েক দিনে চুয়াডাঙ্গায় মাদক নিয়ন্ত্রণে সফলতার খবর পত্রপত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে তার বদলি আদেশ স্থগিত করা হয়। এ আগে গত সপ্তাহে মোহামম্মদ বেলায়েত হোসেনকে চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকায় বদলির আদেশ জারি করা হয়। সম্প্রতি তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলাকে মাদকমুক্ত করার ঘোষণা  দেন। গত কয়েক দিনে বেশ সাড়াও পেয়েছেন তিনি। গতকাল সোমবার ২৫৩ জন তালিকাভুক্ত মাদকব্যবসায়ীকে আত্মসমর্পণ করাতে সমর্থন হয়েছেন। এছাড়াও মাদকদ্রব্য ও চোরাচালান সংক্রান্ত ৭০টি মামলায় ১০৮ জনকে গ্রেফতার, ৭৬ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা, ৮২ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এছাড়া মাদকদ্রব্য বিরোধী বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য আটক করা হয়।

একটি সূত্র জানায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপারের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই জেলার মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নির্মূল করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে জেলার সাংবাদিকদের ইতোমধ্যে মতবিনিময় করেন এবং মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেন। এ উদ্যোগের মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আড়ইশতাধিক মাদকব্যবসায়ী আত্মসর্মপণ করেছেন। তিনি মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যখন কাজ করার অঙ্গীকার নিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় ঢাকায় বদলি করা হয়। জেলার সাধারণ মানুষ যখন নিচিন্তে রাত কাটাচ্ছিলো ঠিক তখনই তার বদলির খবর শুনে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা যায় হতাশা। সাধারণ জনগণ বলতে শুরু করে ভালো কাজ করলে তার বদলি নিশ্চিত।

গতকাল সোমবার পুলিশ হেডকোয়ার্টার সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গায় পুলিশ সুপার যোগদান না পর্যন্ত মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেনকে বদলি আদেশ স্থগিত করা হলো এবং তিনি ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। চুয়াডাঙ্গাবাসী তার এ মাদকবিরোধী অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, এই মুহূর্তে যুবসমাজ প্রধান মাদক হিসেবে ইয়াবা ব্যবহার করছে। এসব মাদকব্যবসা ও ব্যবসায়ীকে রুখতে না পারলে মাদকের বিস্তারের সাথে সাথে অপরাধেরও বিস্তার ঘটতে থাকবে ব্যাপকভাবে। মাদকদ্রবের কারণে আমাদের যুবসমাজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম। দেশের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে না। মাদকদ্রব্য ভয়াবহ জিনিস। কারো বুক-ফাটা কান্নায় বাতাস ভারী হয়? কারো আর্ত হাহাকারে রাতের অন্ধকার আরও নিঃসঙ্গ বেদনার্ত হয়ে ওঠে? কারও পরিবারে আজ অকাল শোকের ছায়া? যুবশক্তি দেশের প্রাণ। কিন্তু তারা নেশার ঘোরে ঢুলে পড়ছে। আমাদের দেশের যে মাদক ব্যবহার হয় তাহলো ইয়াবা, ফেনসিডিল, হেরোইন, চোলাইমদ ইত্যাদি। আমাদের দেশের তরুণ-তরুণী ভবিষ্যত আজ  অজানা গন্তব্যে। মাদকের কারণে দেশ ধ্বংস হওয়ার উপক্রম প্রায়। যারা মাদক গ্রহণ করে তাদেরকে বুঝাতে হবে এর ফলাফল। অভিভাবকগণ সচেতন হতে হবে। যেন তারা মাদক সেবন না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের দেশের যারা মাদক গ্রহণ করে থাকে তাদেরকে ওই পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলেই আমাদের সমাজ সুন্দর হবে।