ঝিনাইদহে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই নিয়ে কী হচ্ছে?

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিশ্ব জাতির নিকট আজ আমরা বঙালি জাতি ও বাংলাদেশ পরিচিত লাভ করেছে। জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানদের যতো পুরস্কৃত করাই হোক তাদের এ ঋণ পরিশোধ যোগ্য নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের পরে ৪৬ বছরে ৫ দফা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।
এ তালিকা নিয়ে সারাদেশে বিভিন্ন গল্প চালু আছে, যে তালিকায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। আবার অনেক অল্প বয়সী যুবক যুদ্ধকালীন সময়ে বিভিন্নভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছে বয়সের কারণে তার নাম তালিকায় আসে নাই। সে ক্ষেত্রে প্রধান মন্ত্রী বলেছেন ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধার বয়স ১৩ বছর হলে সে মুক্তিযোদ্ধার তালিকার অন্তর্ভুক্ত হবে।
এই সমস্ত কারণে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রস্তুুতির কাজ শুরু হয়েছে। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা’র ব্যবস্থা করায় জন সাধারণ সরকারকে সাধুবাদ জনায়। কিন্ত যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা না তাদের যদি তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত হয় এবং রাষ্ট্র তাদের ভাতা দেয় তার দায় দায়িত্ব জন সাধারণ বহন করতে রাজি নয়।
ঝিনাইদহ জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই নিয়ে বিভিন্ন জাইগাতে প্রচ- সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে সারাজেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই নিয়ে এক শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধারা বাণিজ্য শুরু করেছে। তারা বিভিন্ন জনের নিকট থেকে সাক্ষী দেয়ার জন্য নিন্মে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ওপরে ২০ হাজার করে টাকা নিচ্ছে। এর মধ্যে অনেকেই ৫০ থেকে ৮০ বার সাক্ষী দিয়েছে।
জানা গেছে, ভারতীয় তালিকাভুক্ত ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভড়ুয়া পাড়া গ্রামের রাহায়ান উদ্দিন প্রায় ৫০ জনের সাক্ষী দিয়েছে। এছাড়া ভারতীয় তালিকায় নেই কে.সি কলেজের সাবেক পিয়ন শরিফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর, গৌরি বিশ্বাসসহ আরও অনেকে ৮০ জন করে সাক্ষী দিয়েছে। এদের অনেকের নাম শুধু মুক্তিবার্তা তালিকা ছাড়া অন্য কোথাও নেই। ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মুক্তিবার্তায় নাম আছে তাদের ২০০ জনের মধ্যে ১৮০ জনের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আবার দেখা গেছে, এমএজি ওসমানীর সনদ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম ওঠেনি। ১৯৭১ সালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় প্রায় ২৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা ছিলো। এখন তালিকায় নাম আছে ৪৩৪ জনের। আবার নতুন করে ১২০০ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জমা পড়েছে। এভাবেই চলছে ঝিনাইদহ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের কাজ। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কতো জনের নাম নতুন তালিকায় উঠে আসে।
এই প্রসঙ্গে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সিদ্দিক আহাম্মেদের নিকট কয়েক বার মোবাইলে ফোন করলে কল রিসিভ না করার কারণে জানা সম্ভব হয় নি।