দর্শনা অনির্বাণের একুশে মেলার সমাপনী সন্ধ্যায় ৫ গুণী ব্যক্তিকে সম্মাননা প্রদানকালে বক্তারা
দর্শনা অফিস: ‘একুশের ঐকতানে, আজ বাঙালি বিশ্বমানে’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে দর্শনা অনির্বাণ থিয়েটারের আয়োজনে ৮ দিনব্যাপী মহান একুশে মেলা ও নাট্যোৎসবের গতকাল মঙ্গলবার ছিলো সমাপনী সন্ধ্যা। দর্শনা সরকারি কলেজমাঠে অনুষ্ঠিত একুশে মেলার সমাপনী সন্ধ্যায় ৫ গুণীজনকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
সম্মননাপ্রাপ্ত ৫ গুণীজন হলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ আনসার আলীর আকন্দবাড়িয়া গ্রামের মরহুম হারেজ আলী ও মরহুমা রূপসী বেগমের সন্তান। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে মেমনগর বিডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহাজাহান আলী মুক্তি সংগ্রামের একজন বীর সৈনিক। ১৯৪৮ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের নদীয়া জেলার আড়ংঘাটা গ্রামে নিজ পিত্রালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুলনা সিটি ল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী ১৯৪৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ভারতের রানাঘাটের পাটুলী গ্রামে নিজ পিত্রালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে দর্শনা ইক্ষুচাষি সমবায় সমিতির ম্যানেজার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে তিনি কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ইক্ষু বিভাগের ক্লার্ক পদে যোগদান পরবর্তী চাকুরীর ৫৭ বছর পূর্ণ হলে ২০০৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর লোন চেকিং ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জাহাঙ্গীর আলম। ১৯৫৪ সালের ২ আগস্ট পাবনায় নিজ মাতৃগৃহে জন্মগ্রহণ করেন। আবহমান বাংলার ধুলোমাটি মেখে ওঠা কীর্তিমান এক মানুষের নাম কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান। ১৯৫৮ সালের ১৬ জানুয়ারি হৈবৎপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মো. ইসলাম আলী এবং মা আম্বিয়া খাতুন। ১৯৮২ সালে সাতক্ষীরা দেবহাটা থানা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করেন।
আলোচনা পর্বে বক্তারা বলেন, একুশের ইতিহাস রক্ত আর সন্তানহারা দুঃখিনী মায়ের অশ্রুদিয়ে লেখা ইতিহাস। ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনে যাদের রক্তে লাল হয়েছিলো বাংলার মাটি, আমরা তাদের ভুলবো না কোনোদিন। রাজপথের সেই রক্তের দাগ হয়তো মুছে গেছে, কিন্তু যতোদিন থাকবে এ পৃথিবী বিদ্যমান, ততোদিন বাঙালি জাতির অন্তর থেকে মুছবে না সে শোকের ক্ষত। যে ভাষার জন্য এতো ত্যাগ, সেই মায়ের ভাষা আজ বিকৃত হচ্ছে নানাভাবে। তাই আসুন একুশের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে বাংলা ভাষার মহত্বকে অক্ষুণœ রাখি। অনির্বাণ থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক নাট্যকার আনোয়ার হোসেনের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষাবিদ মোশাররফ হোসেন, অ্যাড. শহিদুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, মহাসীন আলী, প্রথম আলো চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি প্রমুখ।