জিন আতঙ্কে যশোরের আদ-দ্বীন নার্সিং ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্রীদের মাঝে জিন আতঙ্ক দেখা দেয়ায় যশোরের আদ-দ্বীন সখিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্সিং ইনস্টিটিউট সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যশোর শহরতলির চাঁচড়া এলাকায় অবস্থিত ওই নার্সিং ইনস্টিটিউটের ছাত্রীদের মধ্যে শনিবার রাত থেকে জিন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে কমপক্ষে ৩০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, জিন আতঙ্ক নয়, দুজনের সাইকোলজিক্যাল ইলনেস আছে। এদের কারণে কয়েকজন ম্যাস হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ায় ১০ মার্চ পর্যন্ত ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ইনস্টিটিউটের কয়েকজন ছাত্রী জানান, শনিবার রাত ৯টার দিকে দুজন ছাত্রী জিন জিন বলে চিৎকার করে ওঠেন। এতে ওই কক্ষে থাকা অন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি কেউ কেউ একে অপরের গলা চেপে ধরে আর্তচিৎকার করে। একপর্যায়ে ওইরুমে থাকা ২৯ জনসহ পাশের রুমের মেয়েদের মধ্যেও ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। ওইসময় ভয়ে অনেকের মুখ দিয়ে ফেনাও বের হয়। হুড়োহুড়িতে কয়েকজন পদদলিত হন। এতে ৫ শিক্ষার্থীর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। পরে তাদের নিজস্ব চিকিৎসা কেন্দ্র শহরের রেলরোডে অবস্থিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

কয়েক শিক্ষার্থী আরও জানান, ইনস্টিটিউটের দোতলার যে রুমে শিক্ষার্থীরা থাকেন, সেগুলোর একটিরও দরজা নেই। আর নিচতলায় তাদের শেখানোর জন্যে একটি লাশকাটা ঘর রয়েছে। ওই কক্ষেরও দরজা নেই। এই কক্ষে তাদের শেখানোর জন্যে মরদেহের ব্যবচ্ছেদ করা হয়। এ কারণে কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা প্রায় রাতেই ভয় পান। দুই সপ্তাহ আগে এক ছাত্রী প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন। পরদিন সকালে বিষয়টি তাদের হাউজ কিপারকে জানালে তিনি দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়ে দেন। তিনি বিষয়টি বাইরে প্রকাশ করতে নিষেধ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. খান শাকিল আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, নার্সিং ইনস্টিটিউটে মোট ১৯০ ছাত্রী রয়েছেন। এদের মধ্যে দুটি মেয়ের সাইকোলজিক্যাল প্রবলেম আছে। এদের অবস্থা মাইনর এবং মেজরের মাঝামাঝি। তারা প্রায়ই এ ধরনের আচরণ করে। অপ্রকৃতিস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, বিষয়টি হাউজ কিপার আমাকে কখনো জানাননি। শনিবার রাতে এ বিষয়টি অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ইনস্টিটিউটের ৫ কক্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদের কারণে আরও কয়েকজন ম্যাস হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত হয়।

হাসপাতালের অধ্যক্ষ বলেন, আহতদের মধ্যে ৫ জনকে আমাদের নিজস্ব হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তারা এখন আশঙ্কামুক্ত। তিনি আরও বলেন, গতকাল রোববার সকালে আমি ছাত্রীদের সাথে কথা বলেছি। তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভবনের কিছু কাজ সংস্কার করার ব্যবস্থা নিয়েছি। এজন্য আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত নার্সিং ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ছাত্রীরা হল ত্যাগ করেছে।