হোটেলে উত্ত্যক্তের শিকার বিদেশি নারী সাংবাদিক!

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ায় আবাসিক হোটেলে উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন আমেরিকান ফ্রিল্যান্স ফটো সাংবাদিক এ্যালিসন জয়েস। বাল্যবিয়ে নিয়ে কাজ করতে এসে রাতযাপনে তিনি কুষ্টিয়া শহরের খেয়া আবাসিক হোটেলে ওঠেন। গভীর রাতে হোটেল মালিক মদ্যপ অবস্থায় প্রায় আধাঘণ্টা ধরে তার কক্ষের দরজা খোলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেছেন এ্যালিসন জয়েস। এ ঘটনায় হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে তিনি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে কুষ্টিয়ার ওই দুই কর্মকর্তার কাছে বিদেশি ফটো সাংবাদিক এ্যালিসন জয়েসের পক্ষে অভিযোগটি জমা দেন সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নারীদের নিয়ে কাজ করতে কুষ্টিয়া এসেছিলেন আমেরিকান ফ্রিল্যান্স ফটোজার্নালিস্ট এ্যালিসন জয়েস। গত ৬ মার্চ রাতে শহরের ছয় রাস্তার মোড়ে অবস্থিত খেয়া আবাসিক হোটেলে অবস্থান কালে রাত একটার দিকে হোটেলের মালিক পক্ষের অংশীদার বিশ্বনাথ সাহা বিশু মদ্যপ অবস্থায় তার কক্ষে প্রবেশ করতে মোবাইলে কল করেন। কল রিসিভ না করায় ৩০ মিনিট ধরে তিনি দরজা নক করেন। একপর্যায়ে হোটেলে থাকা অরেকটি চাবি দিয়ে গেট খোলার চেষ্টা করা হয়। এ্যালিসন জয়েসের দাবি, ঘটনার সময় কক্ষে একা অবস্থান করছিলাম। একজন নারী হিসাবে ওই সময় চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। আতঙ্কিত অবস্থায় বাংলাদেশি সহকর্মী কুষ্টিয়ার ছেলে সাংবাদিক আলী এহসানকে মোবাইলে ঘটনাটি জানাই। আলী এহসান দ্রুত মোটরসাইকেলযোগে সেখানে পৌঁছান এবং আরও কয়েকজনের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন। আলী এহসান রাত তিনটার দিকে এ্যালিসন জয়েসকে শহরের রোজ ভিউ হোটেলে নিয়ে যান। কিন্তু সেই হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, কোনো মহিলাকে একা রুম ভাড়া দেয়া হয় না। সে দেশি হোক আর বিদেশি। তিনি অভিযোগপত্রে লিখেছেন, এখানে না এলে জানতে পারতাম না মফস্বলের নারীরা কতোটা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট ওই দুই হোটেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেছেন এ্যালিসন জয়েস। অভিযোগ জমা দেয়ার সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এসএম মেহেদী হাসান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুজিব উল ফেরদৌস। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলেন, বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত হোটেল মালিক বিশ্বনাথ সাহা বিশু বলেন, উচ্চশব্দে গান-বাজনা হচ্ছে বলে তিনি মোবাইলে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। কী সমস্যা হচ্ছে আমরা তার খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম।