শততম টেস্ট জয়েও সাকিবের অনন্য অবদান

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: টেস্ট অলরাউন্ডারদের শীর্ষস্থান থেকে গল টেস্টের পরেই তার পতন হয়। তার ওপর কলম্বো টেস্টের আগে কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে বলেছিলেন, সাকিবের বলে আর আগের মতো ধার নেই; ভরসা করা যায় না। প্রথম ইনিংসের শুরুতেও এলোপাতাড়ি ব্যাট চালিয়েছেন খানিকক্ষণ। সব মিলিয়ে ব্যাটসম্যান কিংবা বোলার-দুই পরিচয়েই সাকিব আল হাসানের ওপর ছিলো পাহাড়সমান চাপ। কিন্তু, ‘চাপ’ শব্দটা সম্ভবত সাকিবের অভিধানে নেই। আর সকল সমালোচনার জবাব তার চেয়ে ভালো বাংলাদেশে আর কেই বা দিতে পারেন। সাকিব আল হাসান এবারও দিলেন; কথা নয় কাজে।

প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি, দুই ইনিংস মিলে করলেন ১৩১ রান। আর দুই ইনিংসে বল হাতে ছয় উইকেট। শততম টেস্টে বাংলাদেশের চার উইকেটে জয়ের ম্যাচে নায়ক তো এই সাকিবই! তবে, শুধু বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের নবম টেস্ট জয়েই নয়, বরাবরই টেস্টে ‘নায়ক’ এই সাকিব। সাকিবের অভিষেকের পর থেকে বাংলাদেশ আটটি টেস্ট জিতেছে; এর সবগুলোতেই  বড় অবদান ছিলো বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডারের।

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংসটন ও গ্রেনাডায় মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে সাকিব জেতান টানা দু’টি ম্যাচে। বাংলাদেশ পায় টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় জয়। দেশের বাইরে সেবারই বাংলাদেশ প্রথমবারের মত টেস্ট ম্যাচ ও সিরিজ জিতে। শেষ ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হন সাকিব। সিরিজ সেরার পুরস্কারও ওঠে তার হাতে। বাংলাদেশে চতুর্থ টেস্ট জয় আসে এর চার বছর বাদে, জিম্বাবুয়ের হারারেতে। সেই ম্যাচে দুই ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন সাকিব।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে পঞ্চম জয় পায় বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট নেন সাকিব। এর পরের ম্যাচেই খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি আর ১০ উইকেটের দারুণ এক কীর্তি গড়েন সাকিব। চট্টগ্রামে এর পরের টেস্টেও পেয়েছিলেন হাফ সেঞ্চুরি। সর্বশেষ গত অক্টোবরে মিরপুরে ইংল্যান্ডকে ১০৮ রানে হারানোর ম্যাচেও দুই ইনিংস মিলে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন সাকিব। কলম্বোর পি সারা ওভালে সিরিজ সেরার পুরস্কার জয়ের সাথে আরেকটা কীর্তিও গড়েছেন সাকিব। উইকেটের দিক থেকে সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি স্পিনারদের তালিকায় সাকিব চলে এসেছেন সেরা পাঁচে। সাকিবের উইকেট এখন ১৭৬টি। সাবেক ইংলিশ স্পিনার টনি লক ১৭৪ উইকেট নিয়েছিলেন ৪৯ টেস্টে। সাকিব সেটা ছাড়িয়ে গেলেন ৪৯ টেস্টেই। শুধু তাই নয়, এই নিয়ে চতুর্থবারের মত টেস্টের সিরিজ সেরা হলেন সাকিব। এই কীর্তিটাও বাংলাদেশের অন্য কারও নেই। ফলে, সাকিবকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব সময়ের নায়ক বলার কোনো বিকল্পও নেই!