আইসিসির নতুন আর্থিক মডেল মানে না ভারত

 

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আইসিসির বিদায় নেয়া চেয়ারম্যান শশাঙ্ক মনোহরের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে বেশ কিছু বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছিল আইসিসির সর্বশেষ সভায়। তাতে ‘বিগ-থ্রি’ নীতি বাতিল করে নতুন একটি সুষম অর্থনৈতিক বণ্টনপদ্ধতিতে যাওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে নতুন এই অর্থনৈতিক মডেল তারা মানবে না।

গত রোববার আইসিসি প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা ইয়ান হিগিনসকে পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী রাহুল জোহরি লিখেছেন, ‘এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে তা আইসিসির ধরন বদলে দেবে, নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সদস্যদের স্বায়ত্তশাসনে।’ ক্রিকেট ওয়েবসাইট ক্রিকইনফোর। তারা জানিয়েছে, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড নতুন অর্থনৈতিক মডেলকে বলছে ‘বিধিবহির্ভূত’ ও ‘অগ্রহণযোগ্য’। অর্থনৈতিক বণ্টনপদ্ধতিকে তারা ‘অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি’ বলছে। আইসিসির নতুন অর্থনৈতিক মডেলে এক হাজার কোটি টাকার বেশি আয় কমে যাবে ভারতের। ২০১৪ সালে পাস হওয়া ‘বিগ-থ্রি’ নীতিতে ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসির সম্ভাব্য আয়ের বণ্টনের একটা বর্ণনা দেয়া হয়েছিলো। তাতে বলা হয়েছিলো, আগামী আট বছরে আইসিসির আয়ের ২৭.৪ শতাংশই যাবে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কাছে। এই ২৭.৪ শতাংশের মধ্য ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার ভাগে পাওয়ার কথা ছিলো মাত্র ৭.১ শতাংশ অর্থের (ইংল্যান্ডের ৪.৪, অস্ট্রেলিয়ার ২.৭)। বাকি ২০.৩ ভাগ অর্থই জমা হওয়ার কথা ছিলো ভারতের কোষাগারে।

‘বিগ থ্রি’র সেই ধারণা থেকে সরে আসতে চেয়েছে আইসিসি। নতুন অর্থনৈতিক মডেলে চেষ্টা করা হয়েছে সাম্য নিয়ে আসার। ক্রিকইনফোর হিসাব অনুযায়ী, নতুন বণ্টননীতি হলেও ভারত সর্বোচ্চ ২৫৫-২৬০ মিলিয়ন ডলার আয়ের ভাগ পাবে। তবে নতুন প্রস্তাবে উপকৃত হওয়ার কথা বাংলাদেশের। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সম্ভাব্য আয়ের পরিমাণ ৭৫-৮০ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১১০-১১৫ মিলিয়ন ডলার হওয়ার কথা। টাকার অঙ্কে বিসিবির আয় বাড়ার এই পরিমাণ ২৭৭ কোটি টাকা। ২০২৩ পর্যন্ত আইসিসির আয় ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ধরে নিয়েই আয়ের সম্ভাব্য এই বণ্টননীতির প্রস্তাব করা হয়েছিলো। আইসিসির আয় বাড়লে সদস্য বোর্ডগুলোর আয়ের ভাগও বাড়বে। নতুন এই অর্থনৈতিক মডেলের বিরোধিতা করে বিসিসিআই প্রধান নির্বাহী আইসিসিকে লিখেছেন, ‘প্রস্তাবিত নতুন অর্থনৈতিক রূপরেখা নিয়ে যেকোনো আলোচনা হতে হবে স্পষ্ট লিখিত ও গ্রহণযোগ্য নীতিতে। আইসিসির আয়ে বিসিসিআইয়ের যে অবদান, সেটির স্বীকৃতি থাকতেই হবে। এসব কারণেই আমরা প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক মডেল নিয়ে একমত নই।’