নির্যাতনের শিকার যুবক বাড়ি ফিরলেও কাটেনি আতঙ্ক : ঘটনার আগলে মিসকল?

 

চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার সজিব ও আরিফ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে অন্য কথা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ায় নির্মম নির্যাতনের শিকার সেই যুবক বাড়ি ফিরেছে। পরশু রাতেই সে তার এক চাচা ও ভাইয়ের সাথে চুয়াডাঙ্গা বাদুরতলা থেকে বাড়ি ফেরে। তাকে হারাতে হয়েছে নগদ ১০ হাজার টাকাসহ একটি সেলফোন। এ তথ্য দিয়ে আলমডাঙ্গা জাহাপুরের শাহাবুল বলেছে, মোবাইলফোনে মিসকলে পরিচয় হয়েছিলো এক নারীর সাথে। তিনি বলেন, স্বামী থাকে সিঙ্গাপুরে। ভাবী সেজে দেখা করতে বলে। দেখা করতে এলেই কয়েক যুবক পরিকল্পিতভাবে ধরে নিয়ে একটি বাড়িতে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। কাছে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা ও মোবাইলফোন কেড়ে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। বিকেলে সুযোগ বুঝে বাড়ি থেকে দৌঁড়ে পালালে লোকজন জড়ো হয়। তারপরই মুক্তি মেলে।

শাহাবুল (২৬) আলমডাঙ্গা জাহাপুর পশ্চিমপাড়ার তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে। স্ত্রী ও এক সন্তান আছে। তরুণ চাষি হলেও দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছে। এক দফা এক আদম বেপারীর কাছে টাকা দিয়ে প্রতারিত হয়েছে। আবারও মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য সব কিছু প্রস্তুত করা হয়েছে। এরই মাঝে মোবাইলফোনে মিসকলে পরিচয় হয় চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার এক নারীর সাথে। তিনিই দেখা করতে বলেন। কোর্টের কাজ সারতে এসে মোবাইলফোনে ওই নারীর কথামতো দেখা করতে ওখানকার এক বাউল আখড়ার কাছে পৌঁছুতেই কয়েক যুবক এসে ধরে। বলে চল তোর ভাবীর সাথে দেখা করিয়ে দিচ্ছি। ভাবীর সাথে দেখা করানোর কথা বলে শুরু করে মারপিট। নির্মমভাবে মারে। কাছে থাকা সব কিছু কেড়ে নেয়। এরপর বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনার জন্য মোবাইলফোনে বলতে বলে। তাও বলি। বিকেলে সুযোগ বুঝে বাড়ির বাইরে এসে চিৎকার করার কারণে স্থানীয়রা একটি অটোবাইকে তুলে দেয়। পরে বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে বাড়ি থেকে চাচা ইলিয়াস ও ভাই মদন এসে সাথে করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

এদিকে চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার কামরুলের ছেলে সজিব ইদ্রিস আলীর ছেলে আরিফ এক প্রতিবাদলিপিতে বলেছে, গতকাল ২১ মার্চ দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত ‘চুয়াডাঙ্গা তালতলা পশুহাটপাড়ার একটি চক্র নিয়ে চুমকা পুরো মহল্লা, এক যুবককে বন্দি করে দিনভর নির্যাতন, অটোবাইকে তুলে কঠোর পাহারা’ শীর্ষক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সংবাদটি সঠিক নয়। কেননা, গত সোমবার বিকেল ৪টার দিকে হাজরাহাটির মাঠের একটি লিচু বাগান থেকে একটি ছেলে ও মেয়েকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে স্থানীয় লোকজন তাদের গণধোলাই দেয়। মেয়েটি পালিয়ে যায়। এরপর ছেলেটি আমাদের মারধর করে পালানোর সময় লোকজন তাকে আবারও মারধ করে। পরে লোকজন একটি অটোবাইকে বাড়ি পাঠায়। আমাদের বিরুদ্ধে যে চাঁদাবাজির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমরা ওই প্রতিবেদনের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত: গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে ফাহী নামের এক মহিলার বক্তব্যে বলা হয়, ওই যুবককে এক যুবতীর সাথে দেখে তাকে ধরে এনে বাড়িতে মারধর করে। মহল্লার সাধারণ মানুষ অবশ্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কিছু বলতে সাহস পায়নি।