ফের চুয়াডাঙ্গায় অবৈধ কোমর অপসারণের অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও পৌর এলাকায় মাথাভাঙ্গা নদীর কোমর অপসারণ অভিযান কার্যক্রম দ্বিতীয় দিনের মতো পরিচালনা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ অভিযান কার্যক্রম চলে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন ও সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে অপসারণ অভিযান কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলক কুমার মণ্ডল, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, মৎস্য অফিসের ফিল্ড অ্যাসিসসেন্ট আবুল কালাম আজাদ ও রানা আহমেদ এবং এএসআই তুহিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারী, পৌর এলাকার ভিমরুল্লাহ, হাটকালুগঞ্জ, কেদারগঞ্জ, পুলিশ লাইন, হাজরাহাটি ও তালতলা শ্মশানপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ জানান, অবৈধ কোমর অপসারণ চলমান প্রক্রিয়া। এখনও দুই-একটি রয়েছে। বেশকিছু ব্যক্তির নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এরপর কেউ যদি অবৈধ কোমর তৈরির চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আসমানখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী মাথাভাঙ্গা নদীতে কোমর অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার সকাল ৮টার থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা উপজেলার পাঁচটি স্থানে এই অপসারণের কার্যক্রম চালায় চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ভাংবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার আহম্মেদ বাবলু। তিনি বলেন, আমি মাইকে প্রচার করে সকল মৎস্যলোভী জেলে ও এলাকার জনসাধরণকে বলেছি এই মাথাভাঙ্গা নদীতে কেউ কোনো কোমর বাঁধ দেবে না। কারণ নদীতে কোমর বাঁধ দিলে এতে নদী নব্য হারিয়ে ভরাট হয়ে একপর্যায়ে মাথাভাঙ্গা নদী মরা খালে পরিণত হবে। তাই আমি সকলের উদ্দেশ্য জানিয়েছি, এই নদীতে কোনো ব্যক্তি যদি ডালপালা ফেলে কোমর বাঁধ দেয়। তবে তার বিরদ্ধে জরুরি প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমর অপসারণের সময় হাঁটুভাঙ্গা, হাটবোয়ালিয়া, ভাংবাড়িয়া, মহেশপুর ও পোলতাডাঙ্গা এলাকার শতাধিক কোমর বাঁধ অপসারণ করা হয়। রশিতে আকড়া বেধে বিশেষ পদ্ধতিতে নদী থেকে ডাল তোলেন দু শতাধিক শ্রমিক। কোমর বাঁধ অপসারণের সময় উপস্থিত ছিলেন- ইউপি সদস্য জাফর আলী, এসা সরকার, কামালউদ্দীন, মিজানুর রহমান বাদল প্রমুখ।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদার মাথাভাঙ্গা নদীতে কোমর অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দামুড়হুদা উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থানে একটানা প্রায় দু শতাধিক কোমর অপসারণ করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের নির্দেশনায় দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রফিকুল হাসানের উপস্থিতিতে কর্মসংস্থান কর্মসূচির শ্রমিকদের দ্বারা ওই কোমর অপসারণ কার্যক্রম পরিচারিত হয়। কোমর অপসারণকালীন সময় দামুড়হুদা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আইয়ুব আলী, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন, উপসহকারী প্রকৌশলী (দুর্যোগ ও ত্রাণ) নুরুজ্জামানসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।

দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রফিকুল হাসান জানান, দামুড়হুদার বিষ্ণুপুর ব্রিজ থেকে মাথাভাঙ্গা নদীতে দেয়া কোমর অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অচিরেই আবারও অপসারণ কার্যক্রম চালানো হবে। যারা ২-১ দিনের মধ্যে নিজ দায়িত্বে কোমর তুলে না নেবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেছেন তিনি।