ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি : বাঁচার স্বপ্ন ওদের

 

মেহেরপুর অফিস: শেষ হলো অপেক্ষার প্রহর। ভারতের উদ্দেশে আজ রোববার রওনা দেবে মেহেরপুরে মৃত্যুর অনুমতি চাওয়া ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি রোগে আক্রান্তের পরিবার। তোফাজ্জেল হোসেনের দুই ছেলে ও নাতির বিনামূল্যে চিকৎসা প্রদান করবে ভারতের মুম্বাইয়ে অবস্থিত নিউরোজেন ব্রেইন অ্যান্ড স্পাইন ইনস্টিটিউট। এখন বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন তারা। পরিবারটির আত্মহত্যার অনুমতি চাওয়ার খবরটি দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নজরে আসে ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

মেহেরপুর শহরের তোফাজ্জেল হোসেনের চোখে এখন সপরিবারে বাঁচার স্বপ্ন। আজ ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি রোগে আক্রান্ত তার দুই ছেলে ও নাতিকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য রওনা দেবেন ভারতের মুম্বাইয়ে উদ্দেশে। সেখানকার নিউরোজেন ব্রেইন অ্যান্ড স্পাইন ইনস্টিটিউট তাদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করবে। এর আগেও এ রোগে আক্রান্ত প্রায় এক হাজার রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন তোফাজ্জেলের চোখে আনন্দের অশ্রু। এজন্য গণমাধ্যমের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। যে সবুরও এতোদিন বিছানাই শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলো। সেই সবুরেরও এখন স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে।

তোফাজ্জেল হোসেন জানান, ২০০২ সাল থেকে দূরারোগ্য ব্যাধি ডুসিনি মাসকুলার ডিসট্রোফি রোগে আক্রান্ত হয় তার বড় ছেলে সবুর। তার কয়েক বছর পর আক্রান্ত হয় ছোট ছেলে রাইহানুল ইসলাম। সম্প্রতি একই রোগে আক্রান্ত হয় তার নাতি সৌরভ। তাদের চিকিৎসা করতে গিয়ে হারিয়েছেন সর্বস্ব। নিরুপায় হয়ে পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুর অনুমতি প্রার্থনা করে গত ১৯ জানুয়ারি মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন তোফাজ্জেল হোসেন। এরপর দেশি ও বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় সংবাদটি। তারপর থেকেই জেলা প্রশাসন ও দেশের বিভিন্ন মানুষ তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করে আসছে। ভারতে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগীতা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন অলোক কুমার দাস জানান, যদিও এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তারপরও ভারতের হাসপাতলটি তাদের সুস্থ করে তুরতে পারবে বলে দাবি করেছে। ভারতে যাওয়ার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক খাইরুল হাসান জানান, ইতোমধ্যে পরিবারটিকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। তাদের পাসপোর্ট থেকে শুরু করে ভারতের যাওয়ার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মাইক্রোবাস দেয়া হচ্ছে যাতে তাদের দর্শনা পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারে। এছাড়াও ইমিগ্রেশনে যাতে কোনো প্রকার ঝামেলা পোয়াতে না হয় সেজন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।