এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম দনিে এইচএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থতি ১৩ হাজার : বহষ্কিার ৬৬

চুয়াডাঙ্গায় মোবাইলফোন রাখার অপরাধে দুই ছাত্র বহিষ্কার ॥ অনুপস্থিত ৭৪ জন
মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: গতকাল রোববার থেকে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরসহ সারাদেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৫ মে। এবার পরীক্ষায় প্রথম দিনে অংশ নিয়েছে ৯ লাখ ৯৫ হাজার ৪৩৭ জন। পরীক্ষার প্রথম দিনে এবার চুয়াডাঙ্গায় দুজনসহ সারাদেশে বহিষ্কার হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় ৭৪ জনসহ সারাদেশে অনুপুস্থিতির সংখ্যা ছিলো ১৩ হাজার ৬৯ জন পরীক্ষার্থী। ঢাকা বোর্ডের দুজন, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের একজন, মাদারাসা শিক্ষাবোর্ডর ২১ জন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ৪২ জন বহিষ্কৃৃত হয়।
পরীক্ষা শুরুর আগে ঢাকা কলেজ পরিদর্শন করেন শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধে আগামী এসএসসি পরীক্ষা থেকে স্থানীয় প্রশাসনের অধীনে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কথা ভাবছি। বোর্ড পরীক্ষাসহ নানা পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার সাথে জড়িত অসাধু শিক্ষকদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। কিছু অসাধু শিক্ষক প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। শুধু শিক্ষকরাই নন, কলেজের অধ্যক্ষ পর্যন্ত প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারা টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করছেন। এদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সময়মতো তাদেরকে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গায় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে মোবাইলফোন রাখার অপরাধে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলো ৭৪ জন পরীক্ষার্থী। গতকাল রোববার থেকে জেলার চার উপজেলার ১২টি কেন্দ্রে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস। এ সময় কলেজের অধ্যক্ষ সাঈদ মোহাম্মদ নওরোজ উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাধারণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনে ৭৪ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এর মধ্যে- এইচএসসি পরীক্ষায় ৬৪ জন, ভোকেশনাল বিএম পরীক্ষায় ৫ জন এবং আলিম পরীক্ষায় ৫ জন রয়েছে। এছাড়া আলমডাঙ্গার হারদী মীর শামসুদ্দীন পলিটেকনিকে মোবাইলফোন কাছে রাখার অপরাধে দুই ছাত্রকে বহিষ্কার করেছেন সহকারী কমিশনার সুচিত্র রঞ্জন দাস। এদের রোল নং হলো, ১৫৫২৩৭ এবং ১৫৫২৪৩ ।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, সারাদেশে ন্যায় আলমডাঙ্গাও শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। এ বছর আলমডাঙ্গার ৬টি কেন্দ্রে ২ হাজার ৪৪৬ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেছে। রোববার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এইচএসসির বাংলা (আবশ্যিক) প্রথমপত্র, সহজ বাংলা প্রথম পত্র, বাংলা ভাষা ও বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রথম পত্র এবং বাংলা (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের (ডিআইবিএস) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইদিনে মাদরাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে কোরআন মাজিদ এবং এইচএসসি ভোকেশনালে বাংলা-২ (সৃজনশীল -নতুন/পুরাতন সিলেবাস) ও বাংলা-১ (সৃজনশীল নতুন/পুরাতন সিলেবাস) বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া কারিগরি বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা-ইন কমার্সে দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-২ এবং একাদশে বাংলা-১ (সৃজনশীল) বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলমডাঙ্গার ৬টি কেন্দ্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজাদ জাহান ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এস এম ই¯্রাফিল কেন্দ্র পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উপজেলার হারদী এম এস জোহা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের বিএম শাখার ২ জন শিক্ষার্থীকে অসৎ উপায় অবলম্বেনের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিনেশ চন্দ্র পাল। কেন্দ্রসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আবু হাসান বাচ্চু। সহকারী কেন্দ্র সচিব প্রভাষক মনিরুজ্জামান ও তাপন রশীদ। আলমডাঙ্গা মহিলা ডিগ্রি কলেজের সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন সমাজসেবা অফিসার আবু তালেব, কেন্দ্রসচিব ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলহাজ জিয়াউন নাহার, সহকারী কেন্দ্র সচিব বজলুর রহমান।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, পরীক্ষায় মোট ৪ হাজার ১২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ৮৪ জন অংশগ্রহণ করে। পরীক্ষায় ৪২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। এর মধ্যে এইচএসসিতে ৩৩ জন, এইচএসসি (বিএম) এ ৬ জন ও আলিমে ৩ জন রয়েছেন। তবে এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় কেউ অনুপস্থিত ছিলো না। প্রথম দিনে জেলায় মোট ৭টি কেন্দ্রে এইচএসসি বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষায় মোট ৩ হাজার ৩১২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ২৭৯ জন, মোট ৩টি কেন্দ্রে এইচএসসি (বিএম) বাংলা-২ পরীক্ষায় ৫৫৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫০ জন ও একমাত্র কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষায় ১৫৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫২ জন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। অপর দিকে একটি মাত্র কেন্দ্রে এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় ১০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই অংশ গ্রহণ করে।
এইচএসসি পরীক্ষায় মেহেরপুর সরকারি কলেজে ৬১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬০৩ জন, সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ৫৬৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৬১ জন, মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৫২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫২০ জন, মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৪৮৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪৮১ জন, গাংনী ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৫৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫৪ জন, গাংনী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ১৭০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬৮ জন ও বামন্দী-নিশিপুর কলেজ কেন্দ্রে ৩৯৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৯২ জন অংশগ্রহণ করে।
এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় মেহেরপুর মাধ্যমিক বালিকা ও কলেজ কেন্দ্র ১২৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২৪ জন, মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে ৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই ও গাংনী পাইলট স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে ৩৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৫৭ জন অংশগ্রহণ করে।
এইচএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় একমাত্র কেন্দ্র মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ১০৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই অংশ নেয়। এছাড়া আলীম পরীক্ষায় একমাত্র কেন্দ্র মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদীয়া ফাজিল মাদরাসায় ১৫৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫২ জন অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) খায়রুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রশিদুল মান্নাফ কবীর, (শিক্ষা) শেখ ফরিদ আহমেদ, তিন উপজেলা ইউএনও জেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।