স্বামী রাজা হত্যার হোতা জেসমিনের পর তার পরকীয়া বাবুও গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপড়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাবাসীর থানায় ভিড় : খুনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপড়ার রাসেল হক রাজা (৩৫) হত্যার হোতা স্ত্রীর পরকিয়া বাবুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ডিএমপির সহযোগিতায় ঢাকার জুরাইল এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম মোহাম্মদসহ সঙ্গীয় ফোর্স। গ্রেফতারের খবর পেয়ে সাদেক আলী মল্লিকপাড়া, কেদারগঞ্জপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলে এলাকাবাসী।

রাজার স্ত্রী জেসমিন খাতুন জেলহাজতেই রয়েছে। গ্রেফতারের পর জেসমিন স্বীকারোক্তিতে বলেছে, বোনের দেবর এই বাবুর সাথে মোবাইলফোনে সম্পর্ক গড়ে তোলার পর ওর কথা মতোই রাসেল হক রাজাকে হত্যা করা হয়। রাজাকে হত্যার সময় রাজার মুখে বালিশ চেপে ধরে বাবু, বাবুর সাথে থাকা এক বন্ধু মাথায় আঘাত করে। আর আমি (জেসমিন) পা ধরে রাখি। চুয়াডাঙ্গা সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার মৃত মোজাম্মেল হকের ছেলে রাসেল হক রাজা হত্যার মূল দু হোতা ধরা পড়লেও বাকি থাকলো ঘাতক বাবুর বন্ধু। তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাসহ আরো তথ্য নেয়ার জন্য বাবুকে রিমান্ডে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার আদালতে তাতে সোপর্দ করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হতে পারে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদার থানার ওসি (তদন্ত) ইন্সপেক্টর গোলাম মোহাম্মদ এরকমই তথ্য দিয়েছেন। অপরদিকে গতকাল দুপুরে যখনই সাদেক আলী মল্লিকপাড়া, কেদারগঞ্জ পাড়ায় জানাজানি হলে উৎসুক নারী-পুরুষ থানা চত্বরে ভিড় জমায়। একপর্যায়ে তারা হত্যাকারী বাবুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও দাবি তোলে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সাদেক আলী মল্লিকপাড়ার রাসেল হক রাজার সাথে পার্শ্ববর্তী পলাশপাড়ার সহিদুল ইসলামের মেয়ে জেসমিনের সাথে বিয়ে হয় ১৭ বছর আগে। রাজা এক সময় মোটরগাড়ির হেলপারি করতো। পরে সে নিজেই অটো কিনে ভাড়ায় দিয়ে সংসারে আনেন সচ্ছলতা। এদের সংসারে আসে দু সন্তান। ছেলের বয়স বর্তমানে ১০ বছর, আর মেয়ের বয়স ৭ বছর। এদের দিকে তাকিয়েও জেসমিনের মন ভরেনি। সে তার বোনের দেবর ঢাকা জোড়াইনের বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে বাবুর সাথে প্রেমসম্পর্ক গড়ে তোলে। পরকীয়া প্রেমের এক পর্যায়ে জেসমিন ও বাবু দুজনের রাসেল হক রাজাকে হত্যার চক্রান্ত করে। ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর জেসমিন প্রচার করে, তার স্বামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশীদের তা বিশ্বাস হয়নি। পরদিন লাশ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপাতাল মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত করে পুলিশ। হত্যার আলামত মেলে। স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী জেসমিন, তার মা জবেদা খাতুন ও বোন নাসরিনকে ধরে পুলিশে দেয়। পুলিশের কাছে জেসমিন তার স্বামী হত্যার কথা স্বীকার করে। পরবর্তীতে সে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দিও দেয়। নাসরিন ও জবেদা খাতুনকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি তদন্ত কয়েক দফা ঢাকায় যাওয়ার পর অবশেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহযোগতিায় তাকে গ্রেফতার করেন।