দুর্নীতির দায়ে অবশেষে ঝিনাইদহ পিটিআইয়ের সুপারকে বাগেরহাটে বদলি

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পিটিআই’র সুপার আতিয়ার রহমানকে বাগেরহাটে বদলি করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার সুপারকে ঝিনাইদহে পদয়ন করা হয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মাত্র এক বছরের মাথায় সুপার আতিয়ারকে চলে যেতে হচ্ছে। তবে তিনি বদলির আদেশ বাতিলের জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। যতো টাকাই লাগুক ঝিনাইদহে থাকতে হবে এমন সংকল্প নিয়ে তিনি এমপিদের ডিও লেটার সংগ্রহ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ঝিনাইদহ ছাড়তে হলে তার একটা ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে যাবে। সেটি হলো তিনি ঝিনাইদহ পিটিআইকে দেশ সেরা করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তিনি এহেন কোনো জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের তিনি দাওয়াত করে আনেননি পিটিআই ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে তিনি এ সব কাজ করতেন। টাকা দিতে দিতে হাফিয়ে উঠেছে পিটিআইতে প্রশিক্ষণ নিতে আসা ২৪০ জন প্রাইমারীর শিক্ষক। প্রতি মাসে তাদের কাছ থেকে সংস্থাপন চার্জ হিসেবে জোরপূর্বক টাকা উত্তোলন করা হয়। এই টাকা নেয়ার কোনো সরকারি নিয়ম না থাকলেও প্রতি মাসেই তিনি তুলে যাচ্ছেন। পিটিআইর বিভিন্ন ভবন বিবাহিত শিক্ষকদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে বলে কথিত আছে। এছাড়া ঝিনাইদহ পিটিআই’র ভবন ও বাথরুমগুলো বেহাল দশা হয়ে আছে। এ সব বিষয়ে কে বা কারা একটি বেনামী অভিযোগ গণশিক্ষা মন্ত্রী ও ডিজির কাছে পাঠায়।

সেই সূত্র ধরে একটি গোপন তদন্ত সম্পন্ন হয়। তদন্তে সুপারের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়। সেই সূত্র ধরে তাকে বদলি করা হতে পারে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। এদিকে পিটিআই সুপার আতিয়ার রহমান সবচে বড় দুর্নীতি করেছেন প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়ে ছাত্র ভর্তির ক্ষেত্রে। সরকারি এই স্কুলে ছাত্র ভর্তি করতে তিনি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। এই টাকা তিনি একাই লোপাট করেছেন বলে কথিত আছে। তার এই অকামের সহযোগী হিসেবে কাজ করছেন মেহেদী বিল্লাল নামে এক রিসোর্স পার্সোন। তার কুপরামর্শে সুপার আতিয়ার পিটিআইকে একটি বানিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করেছেন। বর্তমান পিটিআইতে ট্রেনিং করা ২৪০ জন শিক্ষকদের স্টাইপেনের টাকা নয় ছয় করার চক্রান্ত চলছে বলে একাধিকসূত্রে জানা গেছে। এদিকে প্রশিক্ষণ স্কুলে ছাত্র ভর্তির জন্য টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করেছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান। তিনি জানিয়েছেন এই টাকা পিটিআই’র অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করা হবে।

তবে তিনি জানান, সরকারিভাবে এই টাকা নেয়ার কোনো বিধান নেই। এসব দুর্নীতির বিষয়ে পিটিআই’র সুপার আতিয়ার রহমান তার ফেসবুক পেইজে জানিয়েছেন, তিনি কোনো দুর্নীতি করেন না। একটি মহল তাকে হেয় করতে এই মিথ্যা তথ্য প্রচার করছে। তবে টাকা তুলে কমিটি খরচ করে বলে এ বিষয়ে তার কোনো দায় নেই বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।