প্রাইভেট পড়তে রাজি না হওয়ায় ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে বেহুশ করে হাসপাতালে পঠিয়েছে সহকারি গ্রন্থাগারিক

সহকারি গ্রন্থাগারিক নবমদশম শ্রেণির গণিত ক্লাস নেন 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: কুষ্টিয়া জেলার ঐতিহাসিক গোস্বামী দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক হাফিজুর রহমানের কাণ্ড। তার নিকট প্রাইভেট পড়তে রাজি না হওয়া এক শিক্ষার্থীকে কঞ্চি দিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়ে বেহুশ করে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, সহকারী গ্রন্থাগারিক হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের নবম-দশম শ্রেণির গণিত বিষয়ের ক্লাস নেন। তিনি প্রাইভেট পড়ান। তার নিকট প্রাইভেট না পড়লেই বিপদ। সেই শিক্ষার্থীকে যথেচ্ছা মারধর করেন। গতকাল শনিবার নবম শ্রেণির গণিতের ক্লাসে ঢুকেই তিনি চড়াও হন নবম শ্রেণির ছাত্র রুহুল আমিনের ওপর। রুহুল আমিন আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের কাতব আলীর ছেলে। কোনো প্রকার কারণ ছাড়াই তিনি রুহুল আমিনকে কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে রুহুল আমিন অজ্ঞান হয়ে পড়ে। সে সময় অজ্ঞান অবস্থায় তাকে অন্যান্য শিক্ষার্থিদের সহযোগিতায় একই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দ্রুত আলমডাঙ্গায় নিয়ে যান। আলমডাঙ্গার আনন্দধামের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সেখানে  তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে পরে নেয়া হয় হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর তার জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফিরলে গুরুতর আহত শিক্ষার্থিকে কী অভিযোগে তাকে এভাবে  ডাকাতের মত মারধর করা হয়েছে। তা জিজ্ঞেস করলে তিনি সাংবাদিকদের জানান-  শুধুমাত্র হাফিজুর রহমানের নিকট প্রাইভেট পড়তে রাজি না হওয়ায় তাকে এভাবে পেটানো হয়েছে। শুধু তাকে নয়, ওই শিক্ষকের নিকট প্রাইভেট না পড়লে সকলের সাথেই একই রকম আচরণ করেন বলে আহত শিক্ষার্থী জানান। এ অভিযোগ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  অন্যান্য  বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও করেছে। তারা জানিয়েছেন– ইতঃপূর্বে পার্শ্ববর্তী গাংনী গ্রামের এক ছাত্রীকে প্রাইভেট না পড়ার কারণে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন হাফুজুর রহমান।

অভিযোগকারিদের অনেকেই জানান, হাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের শিক্ষক নন, সহকারী গ্রন্থাগারিক। গ্রন্থাগারিক হওয়া সত্ত্বেও নবম-দশম শ্রেণির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসের তিনি গণিত ক্লাস নেন। অথচ নবম- দশম শ্রেণির গণিত ক্লাসের জন্য প্রত্যেক বিদ্যালয়ে বিএসসি শিক্ষক নিয়োগ রয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, হাফিজুর রহমান স্থানীয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইনসানুল হক বলেন, গ্রন্থাগারিক হাফিজুর যে তার নিকট  প্রাইভেট না পড়লে মারধর করেন এমন অভিযোগ আগে কেউ কখনও করেননি। এদিকে হারদী হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার জানিয়েছেন, অসুস্থ শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থা বেশ দুর্বল। তাকে আরও কয়েক দিন হাসপাতালের রেখে চিকিৎসার প্রয়োজন।