গাংনীর ভোমরদহ-জোড়পুকুরিয়া রাস্তার সংস্কারে অনিয়ম : এলাকাবাসীর বাধা

গাংনী প্রতিনিধি: দরপত্র বর্হিভূত নিয়মে কাজ করার অভিযোগ মেহেরপুর গাংনীর ভোমরদহ-জোড়পুকুরিয়া পাকা রাস্তা সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার নিয়ে ঠিকাদার ও উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী।

এলজিইডিসূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির অর্থায়নে ভোমরদহ-জোড়পুকুরিয়া ও জোড়পুকুরিয়া ভায়া সহড়াবাড়িয়া সড়কের ৭ কিলোমিটার সংস্কার কাজ চলছে। এ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়ার এহসানুল হক ট্রেডার্স। বালিয়াঘাট গ্রামের ঠিকাদার পিন্টু মিয়া ওই ঠিকাদারের কাছ থেকে সমঝোতার চুক্তিতে কাজ বাস্তবায়ন করছেন। এর ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ২৪ লাখ টাকা। রাস্তা ৩ মিটার চওড়া ও ১২ মিলিমিটার কার্পেটিং করতে দরপত্রের চুক্তি রয়েছে। কিন্তু পিন্টু মিয়া দরপত্রের চুক্তিবর্হিভূতভাবে সংস্কার কাজ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন এলজিইডি গাংনীসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দেয়। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু কাজ দেখভালে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী তোহিদুল ইসলাম ঠিকাদারকে সহযোগিতার মধ্যদিয়ে অনিয়মের মধ্যদিয়ে কাজ সম্পন্ন করছেন। এতে গ্রামের মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। গতকাল রোববার একইভাবে কাজ করার সময় গ্রামবাসী তাতে বাধা দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

জোড়পুকুরিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাহাবদ্দীন বলেন, কাজের শুরু থেকেই নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছেন ঠিকাদার। বিষয়টি গাংনী এলজিইডিতে জানানো হয়। নিয়মানুযায়ী রাস্তায় প্রাইম কোড দিয়ে কার্পেটিং করতে হবে। অথচ কোনো প্রাইম কোড ব্যবহার করা হয়নি। আবার ঠিকমতো রোলিং করা হচ্ছে না। যে অংশে কার্পেটিং করা হয়েছে সে অংশের কার্পেটিং ভ্যানের চাকার সামান্য চাপেই উঠে যাচ্ছে। ১২ মিলি কার্পেটিং করার কথা থাকলেও করা হচ্ছে ৭ মিলিমিটার। বিষয়টি ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলীকে বলা হলে কোনো কর্ণপাত না করেই রাজনৈতিক ও পেশিশক্তির বড়াই দেখান। এমনকি রাস্তায় চাঁদা চাওয়া হচ্ছে মর্মে অভিযোগ করার হুমকি দেন। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি জানতে চাইলে ঠিকাদার পিন্টু মিয়া বলেন, ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রাইম কোড দেয়া হয়েছে। রোদের তাপে তা শুকিয়ে উড়ে গেছে। রাজনৈতিক ও পেশিশক্তি প্রয়োগের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

উপসহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি একাধিক জায়গায় কাজ দেখাশোনা করছেন ফলে কাজে ত্রুটি হতে পারে। প্রাইম কোড না দেয়ার ব্যাপারে তিনি জবাব না দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে উপজেলা প্রকৌশলীর মোবাইলে যোগাযোগ করেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেহেরপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আজিম উদ্দীন সর্দ্দার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এখনই উপসহকারী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিচ্ছি। দরপত্র অনুযায়ী কাজ বুঝে নিতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।