চুয়াডাঙ্গায় দফায় দফায় লোডশেডিঙে ক্ষুব্ধ গ্রাহক সাধারণ

 

ঝড়ে বিধ্বস্ত টাউয়ার মেরামতের সুযোগ নেই : নতুন করে স্থাপনে সময় লাগবে মাস  

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে বিদ্যুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে বিদ্যুত বিভাগের পদস্থ কর্তারা সংবাদ মাধ্যমে দাবি করলেও চুয়াডাঙ্গায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। গতপরশু থেকে দফায় দফায় লোডশেডিঙের কারণে গ্রাহক সাধারণ ক্ষোভে বারুদের মতো ফুঁসতে শুরু করেছে। চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্রে কর্তব্যরতরা পরশুর মতোই গতকালও বলেছেন, চাহিদার অর্ধেকও সরবরাহ মিলছে না। ফলে লোডশেডিঙের মাধ্যমে ৫টি ফিডারের গ্রাহকদের মাঝে বিদ্যুত বিতরণ করতে হচ্ছে।

জানা গেছে, কালবোশেখিতে গত সামবার রাতে জাতীয় বিদ্যুত গ্রিডের মেঘনা নদীর ওপরে বিধ্বস্ত ‘রিভার ক্রসিং টাউয়ার ভেঙে পড়ে। তা মেরামত করার বদলে এখন নতুন করে স্থাপন করতে হবে। এতে ছয় মাস পর্যন্ত লাগতে পারে। টাউয়ারটি নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ ২৩০ কেভি গ্রিড লাইনে বিদ্যুত সঞ্চালন বন্ধই থাকবে। পাউয়ার গ্রিড কোম্পানি (পিজিসিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এই লাইন বন্ধ রাখা হলে দেশের উত্তর, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুত সরবরাহে কিছুটা সমস্যা হবে উল্লেখ করে পিজিসিবির সূত্র বলেছে, স্থানীয় গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহে কিছুটা সমস্যা যেকোনো সময় হতে পারে। টাউয়ার নির্মাণ করে চালু না করা পর্যন্ত পিজিসিবিকে এ আশঙ্কা ও অস্বস্তির মধ্যে থাকতে হবে। বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সূত্র বলেছে, জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে প্রায় ৩৮টি জেলার অনেক স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহে যে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছিলো, তা নিরসন হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে গ্রিডের সমস্যার কারণে কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে না। এ দাবি করা হলেও চুয়াডাঙ্গার চিত্র উল্টো। চাহিদা ২০ মেগাওয়াটের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৯ মেগাওয়াট। মাঝে মাঝে তারও কম মিলছে। ফলে চুয়াডাঙ্গায় দিনে-রাতে, সকালে-সন্ধ্যায় সমান তালে লোডশেডিং লেগেই রয়েছে। ফলে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে গ্রাহক সাধারণ।

এদিকে পিজিসিবির সূত্র বলেছে, বিধ্বস্ত টাউয়ারটির অবস্থা সরেজমিনে দেখার জন্য তাদের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের একটি দল মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। টিম ফিরে যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, টাউয়ারটি মেরামত করে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। কারণ টাউয়ারটির ভিত্তিমূলের (ফাউন্ডেশন) কংক্রিটের মধ্যে স্থাপিত খুঁটিও (যার ওপর টাউয়ার ভর করে দাঁড়িয়ে থাকে) বাঁকা হয়ে গেছে। কাজেই নতুন ভিত্তিসহ টাউয়ারটি স্থাপন করতে হবে। টাউয়ারটি নির্মাণ করেছে কোরিয়ার একটি ঠিকাদারি কোম্পানি। তাদের দিয়েই নতুন করে টাউয়ারটি করতে হলে সময় লাগবে বেশি। তাই এখন দেখা হচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কাজটি করানো যায় কি-না। তাতে সময় কিছুটা কম লাগবে। তাছাড়া কোরিয়ার ওই কোম্পানির করা টাউয়ারটির নকশাও পিজিসিবির কাছে রয়েছে। পিজিসিবির প্রকৌশলীদের সাথে স্থানীয় কনফিডেন্স গ্রুপের বিশেষজ্ঞরাও মঙ্গলবার টাউয়ারটির অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন। বিদ্যুতের উঁচু টাউয়ার নির্মাণে বিশেষায়িত অভিজ্ঞতা থাকা কনফিডেন্স গ্রুপ রিভার ক্রসিং টাউয়ার না হলেও দেশে বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের অনেক উঁচু টাউয়ার নির্মাণ করেছে।