গাংনীতে উত্তরণ ভাষা উৎসবে মকবুল হোসেন এমপি

 

ভাষা-সাহিত্যের সাথে সম্পর্কহীন শিক্ষা অর্থহীন

গাংনী প্রতিনিধি: ভাষা ও সাহিত্যের সাথে সর্ম্পহীন শিক্ষা অর্থহীন বলে মন্তব্য করলেন মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন। গতকাল শনিবার মেহেরপুর গাংনী হাইস্কুলে ‘উত্তরণ ভাষা উৎসব’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, ভাষার জন্য এদেশের মানুষ বুকের রক্ত দিয়েছেন। অথচ আজ যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার হচ্ছে প্রিয় বাংলা ভাষা। অপরদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট অনেকই ভাষা ও সাহিত্য চর্চার প্রতি এখন আর তেমন গুরুত্ব দেন না। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করলেও তারা ভাষা ও সাহিত্যে সম্মৃদ্ধ হচ্ছে না। তাই এ উদ্যোগের মধ্য দিয়ে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা ও সাহিত্যে পারদর্শী হয়ে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উত্তরণ ভাষা চর্চা কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নয় শতাধিক ছাত্রছাত্রী উৎসবে অংশগ্রহণ করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উত্তরণ ভাষা চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক অধ্যাপক রফিকুর রশিদ রিজভীর সভাপতিত্বে ও বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব একেএম শফিকুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিশেষ অতিথিবৃন্দ।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান বলেন, ভাষা আজ জগাখিচুড়ী অবস্থা। একে অপরের মাঝে পার্থক্য বোঝা যায় ভাষা ও সাহিত্য জ্ঞানের মধ্যদিয়ে। যে যত বেশি ভাষা সম্মৃদ্ধ সে ততোবেশি সম্মৃদ্ধ। ভাষা ও সাহিত্য চর্চায় উত্তরণ ভাষা চর্চা কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মীর হাবিবুল বাসার, বেড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আনোয়ার হোসেন, গাংনী হাইস্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, বিশিষ্ট সংগঠক সিরাজুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন গাংনীর বিশিষ্টজনেরা।

স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক রফিকুর রশিদ রিজভী বলেন, উত্তরণ ভাষা চর্চার উদ্দেশে শুধু উৎসব নয়। সারা বছর জুড়ে বিদ্যালয়গুলোর সাথে নিবিড় যোগাযোগের মধ্যদিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা ও ইংরেজি ভাষা এবং সাহিত্যে পারদর্শী হিসেবে গড়ে তোলা। কেননা এ বিষয়ে বিরাট দুর্বলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য সৃষ্টি হয়েছে এ প্রতিষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্ট পরিচালনা করেন লুৎফুন্নেচ্ছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, রাইপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানসহ উত্তরণ ভাষা চর্চা কেন্দ্রের সদস্যবৃন্দ। ব্যক্তিক্রমি এ আয়োজন কেন্দ্র করে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে এক উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ৯টার আগে থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ছাত্র-ছাত্রীদের পদচারণা শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন অতিথিবৃন্দ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে সকাল সাড়ে ১০টায় ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ছাত্র-ছাত্রীরা। খাতা মূল্যায়ন শেষে তিনটি বিভাগের শীর্ষ ১০ (মোট ৩০ জন) জনকে মার্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এছাড়াও ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষায় বির্তক, আবৃতি ও উপস্থিত বক্তৃতা উপস্থাপন করে প্রতিযোগীরা। খুদে বির্তাকিকরা দর্শকদের মুগ্ধ করে।

দ্বিতীয় পর্বে চার গুনি শিক্ষক আ.ফ.ম ইদ্রিস (মরনোত্তর), গোলাম আম্বিয়া (মরনোত্তর), গোলাম মোস্তফা ও নিয়ামতুল্লাহকে উত্তরণ ভাষা চর্চা পদক প্রদান করা হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিতরণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।