রোজার আগেই বিএনপির পুনর্গঠনের নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: পবিত্র মাহে রমজানের আগেই সারাদেশে দল পুনর্গঠনের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পুনর্গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মৌখিকভাবে এ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নির্দেশনা পাওয়ার পর কমিটি গঠন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করা হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট নেতারা জানান, দলের সাংগঠনিক ভিত মজবুত, তৃণমূলের ঐক্য অটুট, গতিশীল নেতৃত্ব বাছাই ও কর্মী-সমর্থকদের চাঙ্গা রাখতে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় দল পুনর্গঠন। সে বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের কাউন্সিল আয়োজনে প্রশাসনের বাধা, নেতাদের মামলা জটিলতা, স্থানীয় নেতাদের কোন্দল, দলের জাতীয় কাউন্সিলসহ বিভিন্ন কারণে বারবার পিছিয়েছে সে সময়সীমা। সারাদেশে দলটির ৭৮ জেলা ও মহানগর ইউনিটের মধ্যে প্রথম দেড় বছরে পুনর্গঠন সম্পন্ন হয় মাত্র ১৫টি জেলায়। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের শুরুতেই দলের স্থায়ী কমিটির সভায় প্রক্রিয়াটি দ্রুতগতিতে এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে পুনর্গঠন করা অধিকাংশ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এখনো ২৫-২৬টি কমিটি ঘোষণা বাকি রয়েছে। সবচেয়ে জটিলতা ছিল ঢাকা মহানগর কমিটি গড়া নিয়ে। সম্প্রতি মহানগরকে উত্তর-দক্ষিণ দুভাগে বিভক্ত করে নতুন কমিটি দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা করা হয়েছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল ও জাসাসের নতুন কমিটি। ছাত্রদলের কমিটি করার প্রক্রিয়াও চলছে।

দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করাসহ আগামী নির্বাচন ও আন্দোলনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সারাদেশে কর্মিসভা-প্রতিনিধি সভা করছে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত ৫১টি টিম। গত ২২ এপ্রিল থেকে ৭ মের মধ্যে দেশের ৭৭টি সাংগঠনিক জেলায় প্রতিনিধি সভা করার কথা। কর্মসূচি শেষ করে প্রতিটি জেলার পরিস্থিতি নিয়ে দলের হাইকমান্ডকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই প্রতিনিধি সভা সম্পন্ন করতে পারছে না দলটি। এখন নতুন করে সময় বাড়ানো হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, দলের নেতা-কর্মীদের দ্বন্দ্ব, সরকারের বাধা, বোরো ধান কাটার মৌসুম, বৈরী আবহাওয়াসহ হাওর অঞ্চলে বন্যার ভয়াবহতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে সময় বাড়ানো হবে। হাওর এলাকাগুলোতেই ইতোমধ্যে সভা পিছানো হয়েছে। আগামী ২০ মে নেত্রকোনা জেলা বিএনপির কর্মিসভা করার জন্য দিন ঠিক করা হয়েছে।

জানা গেছে, বিএনপি পুনর্গঠনের পর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বেগম জিয়া। এ বিষয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশব্যাপী অনেক জায়গায় বিএনপির কর্মিসভাগুলোতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যেই প্রতিনিধি সভা চালিয়ে যেতে হবে। যদি বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সভা শেষ না হয় তবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সময় বৃদ্ধি করা হবে।