চুয়াডাঙ্গার দোস্তবাজারের চা-বিক্রেতা খাটো মানুষ আহম্মদ আলী

নজরুল ইসলাম: আকারে ছোট হলেও মনটা আকাশের মত চা-বিক্রেতা আহম্মদ আলীর। তাইতো সবাই তাকে বড় মিয়া বলে ডাকে। শারীরিক প্রতিবন্ধী আহম্মদ তার প্রবল ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন জীবন সংগ্রাম। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের কুন্দিপুর গ্রামের মৃত শাহ আলম ওরফে সালুর ছেলে দোস্ত বাজারের টঙ দোকানের চা-বিক্রেতা আহম্মদ আলী । উচ্চতা ৪০ ইঞ্চি। দৈহিক গঠন বামনের মতো। এ কারণে সকলে তাকে বড় মিয়া বলে ডেকে থাকেন।  চার ভাইয়ের মধ্যে আহম্মদ আলী মেজ। ১৯৯৯ সালে পিতার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে গিয়ে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুতে পারেননি তিনি। মায়ের কথা মতো সংসারের কাজের লোক আনতে পরের বছরই গ্রামের মেয়ে বুলবুলিকে স্ত্রী করে ঘরে নিয়ে আসেন। বর্তমানে আহম্মদ আলীর বড় ছেলে মিকাইল ৭ম শ্রেণীর ছাত্র । ছোট ছেলে জুাবায়ের প্রথম শ্রেণীতে। ৫ সদস্যের সংসার তার। সম্পদ বলতে বাড়িসহ ১৫ কাঠা জমি। পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার তুলে দিতে নিরন্তর খাটুনি তার। সকাল ৬ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন দোস্তবাজারের নিজের চায়ের দোকানে। সারাদিন খদ্দেরদের নানা হুকুম তামিল করে রাত ১০টায় বাড়ি ফেরেন তিনি। আহম্মদ আলী জানান, পিতা-মাতা এবং স্ত্রী তার চেয়ে প্রায় দেড়গুণ লম্বা। সন্তান দুটোও স্বাভাবিক উচ্চতার। তবে তার নানা মৃত নাজিম উদ্দীন ছিলেন তার সমান। কেরুজ চিনিকলের সাহেবদের সামনে ঘুরাঘুরি করে পিয়নের চাকুরি নিয়ে ছিলেন। দাদার কুলের না, নানার কুলের জিনগত কারণে এমনটি হয়ে থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আহম্মদ আলী জানান, খাটো হওয়ার কারণে আমার দুঃখ নেই। এটা আল্লাহর ইচ্ছে। আমার স্বপ্ন সন্তান দুটো মানুষ করা। আহম্মদ আলী দেশ ও বিদেশের খবর রাখেন। পত্রপত্রিকার মধ্যে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকা নিয়মিত পড়েন তিনি। তাই পত্রিকার হকার অন্য কোনো পত্রিকা দিলে মনে মনে ক্ষুব্ধ হন তিনি। সদালাপী মিষ্টভাষী আহম্মদ আলী সারাক্ষণ পান চিবন আর মিষ্টি করে হাসেন। দেখে মনে হয় তার মতো সুখী মানুষ আর হয় না।