মানসম্মত ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত গড়ে তোলা দরকার

 

এসএসসিতে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের পর যারা আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছিলেন তারাই এখন কাঙ্ক্ষিত বিদ্যাপিঠে ভর্তি হতে পারবে কি পারবে না সে চিন্তায় উদ্বিগ্ন। সারাদেশে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে মানসম্মত কলেজের সংখ্যা মাত্র ২০০টি আর যদি উচ্চ মাধ্যমিক পাঠদান করে এমন সব সরকারি কলেজও বিবেচনায় নেয়া হয় তাহলেও এ সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৩০০টি। এসব কলেজের আসন সংখ্যা সর্বোচ্চ দেড় লাখ অথচ দেখা যাচ্ছে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাই ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১ জন। অন্যদিকে জিপিএ-৪-এর বেশি পাওয়া শিক্ষার্থী ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ জন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী। এর বিপরীতে মাদরাসা এবং কারিগরি বোর্ড থেকে দাখিল ও এসএসসি পাস করেছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৫৪ শিক্ষার্থী তাদেরও ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রত্যাশা তো থাকছেই। আমরা যদি শুধু বিজ্ঞান-বাণিজ্য-মানবিক এসব বিষয় নিয়ে এইচএসসি ভর্তির ব্যাপারটি সর্বাগ্রে বিবেচনা করি, তাহলে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৩০৬ জন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন সংখ্যা মাত্র দেড় লাখ! মানসম্মত কলেজে ভর্তি হওয়ার আগ্রহ মেধাবীদের স্বাভাবিক ও সঙ্গত অভিলাষ। কারণ নিজেদের ভবিষ্যত সুন্দরভাবে গড়তে তাদের স্বপ্ন পূরণে মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন আজও মানসম্মত ভাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যাপ্ত গড়ে ওঠেনি? এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ভর্তির নীতিমালাও জারি করা হয়েছে। কে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে তা নির্ধারণ করবে মূলত বোর্ড, অনলাইনে আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন ধাপে মেধা তালিকার ভিত্তিতে কে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে তা জানানো হবে। অনলাইনে ভর্তি হতে হবে। গতকাল এ বিষয়ে দৈনিক মাথাভাঙ্গায় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। নীতিমালার কিছু শর্ত শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধা করেছে। ইচ্ছে মতো ফি নেয়ার সুযোগ যেমন থাকছে না তেমনই ভর্তি পরীক্ষারও সুযোগ নেই।

পুনশ্চ: রবীন্দ্রনাথের মতে, মানুষের অভ্যন্তরের মানুষটিকে পরিচর্যা করে খাঁটি মানুষ বানানোর প্রচেষ্টাই শিক্ষা, শিক্ষা হলো বাইরের প্রকৃতি ও অন্তঃপ্রকৃতির মধ্যে সমন্বয় সাধন।