পাটের মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে

বিভিন্ন সময়েই পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ ও নানা রকম ঝুঁকিকে সামনে রেখে পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা এটাই যে, এর ব্যবহার রোধ করা সম্ভব হয়নি। পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরে পত্রপত্রিকাতেও নানা সময়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তারপরও এর ব্যবহার বন্ধ না হওয়া স্বাভাবিতভাবেই দুঃখজনক পরিস্থিতিকেই নির্দেশ করে। সম্প্রতি নির্ধারিত ১৭টি পণ্যে পাটের মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিশ্চিত করতে এবং পলিথিন ও প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহারের বিরুদ্ধে সারাদেশে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। আমরা মনে করি, এই অভিযান সফল করতে সামগ্রিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের কঠোর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, একটা সময় পাট বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল ছিলো। সময়ের সাথে সাথে সেই গৌরর হারালেও, সাম্প্রতিক সময়ে আবারও পাটের সুদিন ফিরতে শুরু করেছে, এমন বিষয় সামনে এসেছে। পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগও পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা ইতিবাচক। এছাড়া এটাও অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক যে, পাটের রফতানি আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল মেয়াদে কাঁচা পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে প্রায় ৬ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। যা এ সময়ের রফতানি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি। স্বাভাবিকভাবেই এটি ইতিবাচক। আমরা মনে করি, এখন যদি পাটের মোড়ক ব্যবহারও নিশ্চিত করা যায়, তবে তা শুধু পরিবেশগত দিক থেকেই নয়, পাটের চাহিদা বৃদ্ধি ও কৃষকের পাট চাষের ক্ষেত্রে আগ্রহ বৃদ্ধিতেও কার্যকরী প্রভাব ফেলবে।
অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে জানা যায়, স্থগিতাদেশের কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা না করা গেলে সাধারণ আইন অনুযায়ী দ্বিতীয় দফায় টানা অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী। যদি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা না যায়, তবে স্বাভাবিক আইনে থানায় মামলা হবে, চার্জশিট হবে, জেল-জরিমানা হবে- এমন বিষয়ও উঠে এসেছে। প্রসঙ্গত, ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার ও চিনি সংরক্ষণ ও পরিবহনে বাধ্যতামূলকভাবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদেশ জারি করে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়। এরপর গত ২১ জানুয়ারি পিয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, আলু, আটা, ময়দা, মরিচ, হলুদ, ধনিয়া এবং তুষ-খুদ-কুঁড়ার মোড়ক হিসেবে পাটের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়। দুই দফায় ১৭টি পণ্যে পাটের মোড়ক বাধ্যতামূলক করে সরকার।