খোশ আমদেদ মাহে রমজান

 

প্রফেসর . মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ২ রমজান। আল্লাহর অশেষ করুণা ও অপরিসীম অনুগ্রহ প্রাপ্তির সুবর্ণ সুযোগ রহমত দশকের দ্বিতীয় দিন আজ। ইসলামরুপ প্রাসাদের পাঁচ ভিত্তির মধ্যে রমজান শরিফের রোজা অন্যতম। রোজার মাধ্যমে মানুষ আধ্যাত্বিক, শারীরিক ও সামাজিক উন্নতি লাভ করতে পারে। রোজার অপরিসীম ফজিলত ও সওয়াব হাদিসে বর্ণিত আছে। হাদিসে আছে, জান্নাতে রায়্যান নামক একটি দরজা আছে। এই দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে (বুখারি, মুসলিম)। যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)। হাদিসে আরও এসেছে, এই মাসে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেন যে, হে নেকি অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও এবং হে পাপাচারী, বিরত হও। আর বহু লোককে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে (তিরমিজি ও ইবনে মাজা)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে হুজুর (স.) এরশাদ করেছেন, রোজা ঢাল স্বরুপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না এবং মুর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয়, তবে সে যেন দুইবার বলে আমি রোজা রেখেছি। ঐ সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকের সুগন্ধের চাইতেও উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেন, সে আমার জন্য আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করেছে। রোজা আমার জন্য। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করবো (বুখারি)। এক হাদিসে হুজুর (সা.) বলেছেন, তোমাদের প্রতিপালক বলেন, প্রতিটি সৎ কাজের প্রতিদান আমি দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করি। কিন্তু রোজা শুধু আমার জন্য এবং এর প্রতিদান আমি নিজেই দিবো (তিরমিজি ও আবু দাউদ)। আমাদের ওপর মহান আল্লাহ তায়ালার বড়ই মেহেরবানি যে, এই মাসে রহমতের দ্বার সমূহ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, জান্নাতের দরজাসমূহ খোলা হয় আর জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। অভিশপ্ত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয় যাতে সে আমাদের আমল নষ্ট করতে না পারে। আবু হুরায়রা (রা.) হাদিস বর্ণনা করেছেন, যখন রমজান আসে তখন জান্নাতের (রহমতের, আকাশের) দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শিকলে আবদ্ধ করা হয় শয়তানগুলোকে (বুখারি, মুসলিম)। তাই আসুন, আমরা সবাই রমজানের রোজা যথাযথভাবে পালন করি, যাতে মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের এই মাসের সমুদয় বরকত ও ফজিলত দান করেন। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।