দামুড়হুদার জয়রামপুরে গাঁজা বিক্রেতাকে ধরিয়ে দেয়া সন্দেহে প্রতিপক্ষের ওপর বর্বোরচিত হামলা মাদকব্যবসায়ী কাশেমের হেঁসোর কোপে গৃহবধূ মৃত্যু শয্যায়

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার জয়রামপুর মালিথা পাড়ার চিহিৃত গাঁজা বিক্রেতা রবিউলের স্ত্রী শাহানারা ওরফে বুড়ি নামের একজনকে এক কেজি গাঁজাসহ ধরিয়ে দেয়ার সন্দেহে বুড়ির জামাই জয়রামপুর স্টেশন এলাকার চিহিৃত মাদকব্যবসায়ী কাশেম ওরফে নারান তার সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে নিয়ে প্রতিপক্ষের বাড়িতে বর্বোরচিত হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। মাদকব্যবসায়ী কাশেম বাহিনীর ধারালো অস্ত্রের কোপে মহিলাসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রক্তাক্ত জখম রেক্সোনা খাতুনকে (২৫) দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জয়রামপুর মালিথা পাড়ার মৃত রহেদ আলীর মেয়ে। আহতদের মধ্যে অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন। গত সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে মাদক বিক্রেতা বেপরোয়া কাশেম তার সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে করে ধারালো অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রতিপেক্ষর বাড়িতে ঢুকে ওই বর্বোরচিত হামলা চালায়।

অভিযোগকারীরা বলেছেন, গত রোববার দুপুর ১২টার দিকে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের লোকজন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জয়রামপুর মালিথাপাড়ার চিহিৃত গাঁজা বিক্রেতা রবিউলের বাড়িতে মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে গাঁজা বিক্রেতা রবিউলের স্ত্রী শাহানারা ওরফে বুড়িকে এক কেজি গাঁজাসহ আটক করে। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলার পর আদালতে সোপর্দ করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠান। রবিউলের স্ত্রী বুড়িকে গাঁজাসহ ধরে নিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রতিবেশী মৃত রহেদ আলীর স্ত্রী পারুল বেগম ও ছেলে রহিমের হাত আছে এমন সন্দেহের জের ধরে গত সোমবার বিকেল ৩টার দিকে গাঁজা বিক্রেতা রবিউলের জামাই জয়রামপুর স্টেশন এলাকার চিহিৃত মাদক বিক্রেতা কাশেম ওরফে নারান তার পক্ষের ১০-১২ জনকে সাথে নিয়ে লাঠিসোঁটাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে মৃত রহেদ আলীর বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূ পারুল বেগম (৪০), ছেলে আবদুর রহিম (২২), আত্মীয় হাসিনা খাতুন (২৪), চাইনা খাতুন (২৫) এবং বাশার নামের একজনকে বাটাম দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে আহত করে। মাকে রক্ষা করতে মেয়ে রেক্সোনা খাতুন এগিয়ে এলে তাকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। তার মাথায় ১০-১২টি সেলাই দেয়া হয়েছে।

আহত রেক্সোনা বলেছেন, রবিউলের জামাই কাশেম আমার ভাই রহিমকে ধারালো হেঁসো দিয়ে কোপ মারতে গেলে আমি ঠেকাতে যায়। ওই কোপ আমার মাথায় লাগে। তিনি আরও বলেন, কাশেম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং জয়রামপুর স্টেশন এলাকার চিহিৃত মাদকব্যবসায়ী। কাসেম সম্প্রতি জয়রামপুর স্টেশন পাড়ার চা দোকানি আনারুলকে (৩৫) রাতের আধারে হেঁসো দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যান। গুরুতর রক্তাক্ত জখম আনারুলকে মুমূর্ষু অবস্থায় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তারও মাথায় ৮টি সেলাই দেয়া হয়েছে। ওই ঘটনার পরদিন আহত আনারুলের ছোট ভাই মিনারুল বাদী হয়ে অভিযুক্ত কাশেমকে আসামি করে দামুড়হুদা থানায় মামলা করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেছেন, কাশেম একজন দুর্ধর্ষ প্রকৃতির লোক এবং জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একজন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। কাশেম ওরফে নারান জয়রামপুর মালিথাপাড়ার চিহ্নিত গাঁজা বিক্রেতা রবিউলের জামাই। কাসেম এক সময় এলাকায় চুরি, ছিনতাই ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে বেড়াতেন। বর্তমানে তিনি স্টেশন এলাকায় মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকব্যবসার সাথে জড়িত।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ বলেছেন, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। এছাড়া আগের ওই মামলায় অভিযুক্ত কাশেমকে ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।