ঝিনাইদহের কোর্টচাঁদপুরে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রানা ও আলিমের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত রানা ও আলিম উদ্দিনের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে কুশনা ইউনিয়নের দু সদস্যের উপস্থিতিতে তাদের পরিবারে লোকজনের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ। গতরাতেই লাশ দাফনের প্রক্রিয়া করা হয়।

গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে কোর্টচাঁদপুর উপজেলার কুশনা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের নাকরতলা মাঠে র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী দল পূর্ব-বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল-জনযুদ্ধ) আঞ্চলিক নেতা মাইদুল ইসলাম রানা (৪৫) ও তার সহযোগী আলিম উদ্দিন (৫৫) নিহত হন। এ সময় র‌্যাবের তিন সদস্য হাবিলদার মহসিন আলী, কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম ও আবুল কালাম আজাদ আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় অস্ত্র ও গুলি।

র‌্যাব-৬, সিপিসি-২ ঝিনাইদহ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মনির আহমেদ জানান, রাত ১২টার দিকে র‌্যাবের টহল দল কোটচাঁদপুরের কুশনা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে পৌঁছুলে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ্যে করে গুলি ছোড়ে। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাব ও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এতে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ার পর চরমপন্থীরা পালিয়ে গেলে পূর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টির আঞ্চলিক নেতা মাইদুল ইসলাম রানা ও তার সহযোগী আলিম উদ্দীনকে গুলিবিদ্ধ আহত অবস্থায় র‌্যাব উদ্ধার করে স্থানীয় কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে।

সেখানকার কর্তব্যরত ডাক্তার রাত পৌনে ১টার দিকে তাদেরকে মৃত বলে ঘোষণা করে। পুর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টি (এমএল) জনযুদ্ধের আঞ্চলিক নেতা নিহত মাইদুল ইসলাম রানা কোটচাঁদপুরের বকশিপুর গ্রামের ফকির চাঁদ মণ্ডলের ছেলে। অন্যদিকে আলিমুদ্দিন একই উপজেলার বহরমপুর গ্রামের সলেমান মণ্ডলের ছেলে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে র‌্যাব দুইটি বিদেশি একনালা বন্দুক, একটি নাইন এমএম পিস্তল, ১৫ রাউন্ড গুলি, একটি হাসুয়া ও দুইটি মোবাইলফোন উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা জানান, রাতে গুলির শব্দ পেয়ে পুলিশ কোটচাঁদপুর হাসপাতালে যায়। সেখানে আমরা দুই জনের গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পায়। উল্লেখ্য, নিহত মাইদুল ইসলাম রানা জনযুদ্ধের প্রধান দাদা তপনের সহযোগী ছিলো। পূর্ববাংলা কমিউনিষ্ট পার্টির একচেটিয়া দাপটের সময় রানা ছিলো মুর্তিমান আতঙ্ক। নিহত রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যাসহ ১৪ মামলা রয়েছে। এছাড়া আলিমের বিরুদ্ধে ১২টি হত্যাসহ ৩টি অস্ত্র মামলা রয়েছে।মাইদুল ইসলাম রানা পূর্ববাংলা কমিউনিস্টপার্টির আঞ্চলিক নেতা ও আলিম তার সহযোগী বলেন জানান তিনি।

১৯৯৫ সালে ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়া থেকে সন্ত্রাসী রানা একে-৪৭ রাইফেলসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। জামিনে মুক্তি পেয়ে সে আবারও অন্ধকার জগতে ফিরে যায়।