সুইস ব্যাংকে পাচার হওয়া টাকা আ’লীগের নয়: সেতুমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: সুইস ব্যাংকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কারো টাকা নেই বরং এ টাকা বিএনপি নেতাদের বলে দাবি করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন,ওই ব্যাংকে বাংলাদেশীদের অর্থ জমার পরিমাণ বাড়ানোর সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোন নেতা-কর্মীর জড়িত থাকার প্রমাণ দিতে পারলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সুইস ব্যাংকের কাছেও বাংলাদেশীদেও অর্থেও বিষয়ে তথ্য চাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ক্ষমতাসীন দলটির সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। দলের সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে তার সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অর্থ পাচারের রেকর্ড আওয়ামী লীগের নেই। বিএনপি বরাবরই অর্থ পাচার করে, এটা আদালতের মাধ্যমে প্রমাণিত। তারেক-কোকোর মানি লন্ডারিং এর কথা সবার জানা আছে। তবে আওয়ামী লীগের কেউ সুইস ব্যাংকে টাকা রেখেছে এমন খবর আমরা পাইনি। প্রমাণ সহকারে তথ্য পেলে সে যেই হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুইস ব্যাংকের টাকার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে তিনি বলেন, বিষয়টি উদ্বেগজনক। এই অর্থ বাংলাদেশ থেকে গেছে এটাতো কেউ বলেনি। এ নিয়ে তদন্ত চলছে এবং সুইস ব্যাংকের কাছে এ নিয়ে তথ্য চাওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপি কোনো ইস্যু না পেয়ে ভ্যাট নিয়ে মাঠ গরমের চেষ্টা করছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভ্যাটের টাকা দিয়ে বিএনপির মত হাওয়া ভবন বানানোর কোনো ইচ্ছে আওয়ামী লীগের নেই। বিএনপি ভেবেছিলো ঈদের যাত্রা পথের কোন ইস্যু নিয়ে কথা বলবে, কিন্তু তাদের সব ইস্যু মাঠে মারা যাওয়ায় এখন মাঠ গরম রাখতে ভ্যাট নিয়ে নানান কথা বলছে। আসলে বিএনপি এখন বেপরোয়া হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনকল্যাণে বাজেটের আপত্তির দিকগুলো সংশোধন ও পরিমার্জন করায় বাজেট পাসের পর বিএনপি ছাড়া সবাই খুশী বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড ২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনের গত বছরের তুলনায় এবার বাংলাদেশীদের টাকার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। গতকালের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় দলের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন,“আশা করি দু-এক সপ্তাহের মধ্যে সহ-সম্পাদকের তালিকা দিতে পারবো। আর সেটা অবশ্যই একশোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রত্যেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের জন্য তিনটি, প্রচার ও রের জন্য ৫টি এবং তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির জন্য ৪টি করে সহ-সম্পাদক রাখা হবে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি এখন কোনো ইস্যু খুঁজে পাচ্ছে না মন্তব্য করে ক্ষমতাসীন দলের এ নেতা বলেন, সেজন্যই তারা অখুশি, বেপরোয়া ও আবোল-তাবোল বকছে। আমি তো বলেছিলাম, ওদের কয়েকজন প্যাথলজ্যিকাল লায়্যার আছে। তারা বসে বসে বানোয়াট কাহিনী দিয়ে মিথ্যাচার করে। তারা মাঠে তো যেতে পারে না। ৫৯৬জনের কমিটি। কিন্তু সবাই তো মিলে তো আট দিনও মাঠে যেতে পারেনি। এরা কি আন্দোলন করবে? এদের আন্দোলন তো আষাঢ়ের তর্জন-গর্জনের মতোই অসার। গুলশানের হলি আর্টিজান ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ, যেখানে আমরা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যমত গড়ে তুলেছি। আমাদের দেশের সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ ও সম্পৃক্ত করে আমাদের টেরোরিজমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ কাজ করতে হবে। এটাই হবে টেরোরিজম প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর পন্থা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, একেএম এনামুল হক শামীম, বিএম মোজাম্মেল হক, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, শ্রম সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কৃষি সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।