কথিত ছেলে ধরা সন্দেহে প্রেমিক-প্রেমিকাসহ চারজনকে গণধোলাই

মেহেরপুর অফিস ঃ বিয়ের জন্য মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী থেকে প্রেমিকাকে মাইক্রোযোগে মেহেরপুর কাজি অফিসে আনার সময় প্রেমিকার স্বজনদের চক্রান্তে কথিত ছেলে ধরা সন্দেহে প্রেমিক-প্রেমিকাসহ ৪ জন গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের সহযোগিতায় তারা মুক্ত হলেও তাদের পুলিশ হেফাজতে রেখে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মেহেরপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, মেহেরপুর শহরের কাথুলী বাসস্ট্যান্ড এলাকার মৃত রেজাউল হকের ছেলে রাসেলের সাথে মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমানের ভাই ওই গ্রামের হাফিজুর রহমানের মেয়ের উম্মে হাবিবা মেধার (১৮) প্রেম সম্পর্ক গড়ে উঠে। যে কারণে ইতোমধ্যে এর আগে একাধিকবার মেধা তার প্রেমিক রাসেলের সাথে বিয়ে করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। প্রতিবার রাসেল মেধাকে ফিরিয়ে দেয়। এদিন মেধার অনুরোধে প্রেমিক রাসেল মাইক্রোবাস ভাড়া নিয়ে মোনাখালীতে যায় মেধাকে নিয়ে আনতে। প্রেমিকা মেধা প্রেমিক রাসেলের ভাড়া মাইক্রোতে ওঠার সাথে সাথে মেধার এক আত্মীয় তার চাচা ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুর রহমানকে জানান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং স্থানীয়দেরকে তাদের পিছু ধাওয়া করার নির্দেশ দেন। ওই সময় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেল ও আলগামন তাদের পিছু ধাওয়া করে। পিছু তাড়া দেখতে পেয়ে মাইক্রোবাসচালক সদর উপজেলার দফরপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে দিপু গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেয়। এ সময় তাদেরকে ছেলে ধরা বলে চিৎকার দিলে জনতা মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাদেরকে আটক করে প্রেমিক-প্রেমিকা ও মাইক্রো চালককে গণধোলাই দেয়। একই সময় খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের নেতৃত্বে সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরীসহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে তার আগে শহরের নতুনপাড়ার দুদুর ছেলে কৌতুহলি যুবক আমিরুল ইসলাম (২৩) ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিড়ের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে যায়। ওই সময় ছেলে ধরা সন্দেহে তাকেও গণপিটুনী দেয়।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, মেহেরপুর পুলিশ প্রেমিক-প্রেমিকাসহ ৪ জনকে থানায় নেয়। সন্ধ্যায় উভয় পরিবারের সদস্যদের হাতে আটকদের তুলে দেয়া হয়।