তাহলে কি চুয়াডাঙ্গায় সন্তান কেনা-বেচা বৈধ?

তাই বলে কি নিঃসন্তান কোনো দম্পতি অন্যের সন্তান নিয়ে লালন পালন করতে পারবেন না? অবশ্যই পারবেন, সেটা আইনগতভাবে হওয়াই কি বাঞ্ছনীয় নয়? চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের আরামপাড়ার অস্থায়ী এক দম্পতি আলমডাঙ্গার পল্লি পাঁচকমলাপুরের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছ থেকে সন্তান দিয়েছে। টাকা নিয়ে সন্তান অন্যের কোলে তুলে দেয়া হয় বলে পত্রিকায় যথাযথ গুরুত্বসহকারে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও ক্রেতার কোলেই রয়েছে নবজাতক। এরপরই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি চুয়াডাঙ্গায় সন্তান কেনা-বেচা বৈধ?
কোথাও কোনো নবজাতক কুড়িয়ে পাওয়া গেলে প্রথমে পুলিশের কাজ উদ্ধার করা। এরপর নিরাপদ কোনো মায়ের কোলে রেখে আদালতে বিস্তারিত পেশ করার কথা। আইনের দৃষ্টিতে আদালত আদেশ দেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সমাজসেবা অধিদফতরের কর্মকর্তার মাধ্যমে নবজাতককে শিশু নিরাপদ কেন্দ্রে বা হোমে প্রেরণ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিঃসন্তান কোনো দম্পতি ওই শিশুর সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়ার আবেদন করে সকল প্রকার শর্ত মানতে রাজি হলে আদালত আবেদককেও দিয়ে থাকেন। শিশু নিরাপদ কেন্দ্র থেকেও শিশুর দায়িত্বভার দেয়া হয়। এসব আইনগতভাবেই হয়, তাই বলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে আদালতকে পাশ কাটিয়ে কোনো দম্পতি তার সন্তান বিক্রি করবে, নবজাতক কেনা-বেচায় কোনো ফার্মেসি মালিকের সংশ্লিষ্টতা থাকবে তা সভ্য সমাজের ছবি হওয়া উচিত নয়। তাছাড়া কোনো দম্পতি তার সন্তানকে মানুষ করতে পারবেন না বলেও দায় এড়াতে পারেন না। কোনো পিতা-মাতা অপারগ হলে রাষ্ট্র তার দায়িত্ব নিতে সাংবিধানিকভাবেই বাধ্য।
গর্ভধারিণী মা তার সন্তান কি সহজে বিক্রি করেন? নাকি স্বামীর ভয়ে নিজের সন্তান নিজের কোলে রাখতে না পারার কষ্ট মুখ লুকিয়ে সহ্য করছেন? তাছাড়া সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার দেড় সপ্তাহ আগেই নোটারি পাবলিক করে ভুল তথ্য দেয়ার হেতু কি? এসব প্রশ্নের জবাব খুঁজে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বাধা কোথায়? নিঃসন্তানের প্রতি মায়া? প্রকৃত মায়ের কষ্ট, নিঃসন্তানের প্রতি দরদী দৃষ্টির কোনোটিই খাটো করে দেখার দরকার নেই। দেখা দরকার যা হচ্ছে তা আইন সমর্থন করে কি-না। আইন অবজ্ঞা সমাজে বয়ে আনে অমঙ্গল।