নেতার জরিমানা ৬০ হাজার টাকা ॥ সাথে মিললো তিরস্কার

জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গার উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে হাবিবুর রহমান মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক। একই সাথে তিনি ক্ষমতাসীন দলের গ্রাম পর্যায়ের একজন নেতা। নেতা হওয়ার কারণে দিন দিন তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠছিলেন। মানুষকে করছিলেন তুচ্ছ-তাচ্ছিলো ও কারণে-অকারণে মারপিট। অন্যদিকে কুলতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মামুন একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তিনিও স্কুলটির মালামাল তছরূপ করছিলেন। চলছিলেন ইচ্ছামাফিক। গ্রামের একই পরিবারের ৪ জনকে কুপিয়ে জখম করার অপরাধে তাদেরকে সালিসে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা ও তিরস্কার করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গত শনিবার বিকেলে সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগরের উপস্থিতিতে এ সালিসসভা অনুষ্ঠিত হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার নিজের স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের নানাভাবে অপদস্ত ও মারপিট করা ও গ্রামের সকল বিষয় নিয়ে নাক গলাতেন। এতে গ্রামবাসী তার ওপর ছিলো তিক্ত-বিরক্ত। সর্বশেষ গত ২৩ জনু রাতে কুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মামুনের সাথে স্কুলের আসবাবপত্র সরানোকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মী মাহবুবুর রহমান মিলুর সাথে বিরোধ বাধে। এ সময় মামুন দেশীয় অস্ত্রসহ সহযোগীদের নিয়ে হামলা চালিয়ে মাহবুবুর রহমান মিলু তার দুই ভাই শহিদুল ইসলাম ও মশিয়ার রহমান এবং ভাতিজা রাজাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়াকালে শিক্ষক হাবিবুর রহমান তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে রাস্তার মধ্যে আহতদের আটক করে দ্বিতীয় দফায় বেদম মারপিট করে এবং তাদেরকে হাসপাতালে আসতে বাধা প্রদান করে। আহতরা থানায় মামলা করতে গেলে তাদের মামলা নিতে পুলিশকে নিরুৎসাহিত করা হয়। অনন্যপায় হয়ে আহতদের পক্ষে হাবিবুর রহমানসহ অন্যদের আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় শিক্ষক মামুনের পক্ষ থেকে থানায় আহতদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ নড়ে-চড়ে বসে। ডাকে সালিসসভা। চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোর্তূজা, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, উথলী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান, রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান তাহাজ্জত হোসেন, হাসাদাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রবি বিশ্বাস, উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন খান ও বাঁকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শাখাওয়াত হোসেন ফরজসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও মোক্তারপুর গ্রামবাসীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সালিসে শিক্ষক হাবিবুর রহমান ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মামুন দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানাসহ এমন কর্মকা- করায় সালিসে তিরস্কার করা হয় বলে জানা গেছে।