ঝিনাইদহের লুৎফর গোলাপ চাষে স্বাবলম্বী

ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চলে দিন দিন ফুলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যান্য চাষের তুলনায় অধিক মুনাফা পাওয়া যায় বলে চাষিরা ফুল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কালীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সব থেকে বেশি ফুলের চাষ হয় ৬ নং ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নে।
উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮০ হেক্টর জমিতে ফুলচাষ হচ্ছে এর মধ্যে অধিকাংশ জমিতে গাধা ফুল, অল্প পরিমাণ জমিতে রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুলের চাষ হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের ফুল চাষি লুৎফর রহমান জানান, তার ২ একর জমিতে ফুলের চাষ আছে। এর মধ্যে ২ বিঘা জমিতে গোলাপ ফুলের চাষ। ফুলচাষি লুৎফর রহমান আরও জানান, সাধারণত বোশেখ-জ্যৈষ্ঠ্য মাসে গোলাপের চারা রোপণ করতে হয়। গাছে ফুল আসতে প্রায় ৬ মাস সময় লাগে। ফুল আসার পর থেকে ৮ বছর যাবৎ একাধারে ফুল পাওয়া যায়। এ অঞ্চলে আমেরিকার হ্যারি জাতের গোলাপ ফুলের চাষ বেশি হয় বলে তিনি জানান। এক বিঘা জমিতে প্রায় ৪ হাজার গোলাপের চারা লাগানো যায়। এতে বিঘাপ্রতি প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তিনি জানান, দেড় বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করে তিনি বছরে খরচ বাদে ৮০ হাজার টাকা মুনাফা পান। শীতকালে গোলাপের বেশ চাহিদা থাকায় ভালো মুনাফা পেলেও বর্ষা মরসুমে ফুল একেবারেই বিক্রি হয় না। এসময় অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করে বলেন ফুল ব্যবসার ওপর সরকারি কোনো নীতিমালা না থাকায় ভারত থেকে বৈধ ও অবৈধ পথে ফুল আসায় দেশীয় ফুলচাষিরা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভারত থেকে ফুল আসা বন্ধ করা গেলে ফুল চাষ থেকে চাষিরা যথেষ্ট লাভবান হতে পারবেন। তিনি জানান সিমলা-রোকনপুর ও ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার পরিবার কোনো না কোনোভাবে ফুল চাষের সাথে সম্পৃক্ত। নারীরা ফুল তুলে মালা গাথে, গাঁট বাঁধে। এক জন নারী দিনে কমপক্ষে ১শ’ ৫০ টাকা থেকে ২শ’ টাকা আয় করতে পারেন। লুৎফর রহমান মনে করেন উপযুক্ত পরামর্শ ও ভারত থেকে ফুল আসা বন্ধ হলে চাষি বাঁচবে এবং এর সাথে জড়িত পরিবারগুলো বাড়তি আয়ের মাধ্যমে সংসারে সচ্ছলতা ধরে রাখতে পারবে। উপজেলার ফুলচাষিরা বর্ষা মরসুমে ফুল সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। পাশাপাশি বিভিন্ন এনজিও ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহয়াতায় ফুলচাষিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও দাবি জানান ফুলচাষিরা।