চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর আলমডাঙ্গায় বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং

পল্লী বিদ্যুতের মাইকিঙে ওজোপাডিকোর গ্রাহক সাধারণকে বিভ্রান্ত হওয়ার কারণ নেই
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় গ্রাহক সাধারণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চাহিদামতো বিদ্যুত না পেয়ে ভ্যাপসা গরমে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে অনেকে। বিদ্যুত নির্ভর ক্ষুদ্র কারখানাগুলোর উদ্যোগতরা দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কায় চরম অনিশ্চয়তার দিনগুনছেন। কিন্তু কেন বিদ্যুতের এ বেহালদশা? অপরদিকে গ্রিড সাবস্টেশনে উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সমিটার স্থাপনের কারণে পল্লী বিদ্যুত সমিতির গ্রাহকদের আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিদ্যুত সরবরাহ করা হবে। তবে ওজোপাডিকোর গ্রাহকদের এ সমস্যা থাকবে না বলেই জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা বিদ্যুত বিতরণ কেন্দ্রে কর্তব্যরতরা।
ওজোপাডিকোর চুয়াডাঙ্গা বিতরণ কেন্দ্রের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের ৫টি ফিডারসহ মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গায় বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। আশপাশে বিদ্যুত সরবরাহের দায়িত্বে পল্লী বিদ্যুত সমিতি। চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরস্থ ৩২ কেভি গ্রিড সাব স্টেশনে বিদ্যুত সরবরাহ করে জাতীয় গ্রিড। এখন থেকেই মূলত ওজোপাডিকো ও মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির গ্রাহকদের জন্য বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়। ওজোপাডিকো চুায়াডাঙ্গা বিতরণ কেন্দ্রে মোট বিদ্যুত চাহিদা ২২ থেকে ২৩ মেগাওয়াট। গত ২৭ জুলাই থেকে এ চাহিদার বিপরীতে কখনো ১০ কখনো ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুত সরবরাহ করা হচ্ছে। ওজোপাডিকো চুয়াডাঙ্গা সুইচরুমে কর্মরত মীর কামরুজ্জামান এসব তথ্য দিয়ে বলেছেন, শুনেছি জাতীয় গ্রিড লাইনে কাজ করা হচ্ছে। এ কারণে যেমন বিদ্যুত সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে তেমনই উৎপাদনেও রয়েছে ঘাটতি। ফলে সমস্যা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। তবে চুয়াডাঙ্গার জাফরপুর গ্রিড সাব স্টেশনে নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজনের কারণে বিদ্যুত সরবরাহে বিঘিœত হচ্ছে না। পল্লী বিদ্যুতের কিছু এলাকায় বিদ্যুত সরবাহ সাময়িক বন্ধ রাখার জন্য মাইকিং করেছে। ওই মাইকিঙের সাথে চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকোর বিতরণ কেন্দ্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ফলে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও আলমডাঙ্গা পৌর এলাকাসহ ওজোপাডিকোর গ্রাহকদের ওই মাইকিং নিয়ে ভাবতে হবে না।
চুয়াডাঙ্গার ৫টি ফিডারের মধ্যে সবার্ধিক বিদ্যুত লাগে বিজিবি ফিডারে। কারণ এলাকাবেশি। যখন জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুত পাওয়া যায় না, তখন এই ফিডারে বিদ্যুত সরবরাহ করা হলে অন্য ফিডারগুলো বন্ধ রাখতে হয়। তবে অন্য ফিডারের ক্ষেত্রে একসাথে একাধিক ফিডার চালানো যায়। যদিও সে ক্ষেত্রেও তিনটির বেশি চলানো যায় না। ফলে ঘুরে ফিরেই এখন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এই লোডশেডিঙের সাথে সাথে বেড়েছে ট্রিপ সমস্যা। মূলত সকল ফিডারেই বিদ্যুত সরবরাহের যা ক্ষমতা তার চেয়ে অনেক বেশি বিদ্যুত ব্যবহৃত হচ্ছে। সে কারণেই মূলত ট্রিপ করে। তা চালু করতেও কিছুটা সময় লেগে যায়। তাতে মনে হয়, বিদ্যুতের আসা যাওয়া বেড়েছে বহুগুণ।
গত কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় বিদ্যুত সরবরাহের চিত্র ভয়াবহ। এ বিষয়ে ওজোপাডিকো চুয়াডাঙ্গা বিতরণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা বলেছেন- চাহিদা যখন ২৩ মেগাওয়াট, তখন পাওয়া যাচ্ছে ১০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার গ্রাহকদের ভাগ্যে জুটছে মাত্র ৫ মেগাওয়াট। মেহেরপুরে দিতে হচ্ছে তিন মেগাওয়াট। আলমডাঙ্গায় যেখানে চাহিদা ৫ মেগাওয়াট সেখানে দিতে হচ্ছে ২ মেগাওয়াট। এভাবেই চালানো হচ্ছে। এসব শুনে গ্রাহকদের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, শোনা যায় চাহিদামতোই বিদ্যুত উৎপাদন হচ্ছে। তাহলে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুরের গ্রাহকরা বিদ্যুত পাবে না কেন? বিদ্যুত না পেয়ে বহু ক্ষুদ্র কল-কারখানার উৎপাদন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর খেসারত দেবে কে?
এদিকে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুতের পদস্থ এক কর্মকর্তা বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা জাফরপুরস্থ গ্রিড সাবস্টেশনের বর্তমান বিদ্যুত গ্রহণ ও সরবরাহের ক্ষমতা ৫০ মেগাওয়াট। থেকে দেড়শতে উন্নীত করার লক্ষ্যে যাবতীয় যন্ত্রপাতি ইতোমধ্যেই গ্রিড সাব স্টেশনে পৌঁছেছে। যখন এসব যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা হবে তখন তিনদিন নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণের বিদ্যুত গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।