বড় বোনের ধারালো অস্ত্রের কোপে ছোট বোন নিহত

দামুড়হুদার গোপালপুরে পিতার জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে গণ্ডগোল

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় বড় বোন মিনি খাতুনের হেঁসোর কোপে ছোট বোন হুসনে আরা ছবি নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পিতার জমিজমা ভাগাভাগি ও পারিবারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বড় গণ্ডগোলের এক পর্যায়ে বড় বোনের ধারালো হেঁসোর কোপের শিকার হন হুসনে আরা ছবি। নিহত ছবি গোপালপুর গ্রামের মৃত মনোয়ার হোসেন ওরফে মনা মালিতার মেয়ে এবং কুষ্টিয়া ভেড়ামারার কৃষিব্যাংক কর্মকর্তা হাফিজুল ইসলামের স্ত্রী। তিনি কয়েকদিন আগে ভেড়ামারা থেকে বাপের বাড়ি গোপালপুরে বেড়াতে আসেন।

পুলিশ ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, জুড়ানপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত মনোয়ার হোসেন ওরফে মনা মালিতার ৫ মেয়ে ও ৩ ছেলে। এদের অধিকাংশই মানসিকভাবে অসুস্থ। ৫ বোনের বিয়ে হলেও এ কারণে ৪ বোনেরই সংসার টেকেনি। তারা পিতার ভিটেয় থাকেন। এর মধ্যে হুসনে আরা ওরফে ছবির বিয়ে হয় ভেড়ামারায়। তিনিই বোনদের মধ্যে কিছুটা সুস্থ। বেশ কিছুদিন আগে স্বামীর ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে তিনি বড় ভাই আব্দুল মতিন বাবলুকে টাকা ধার দেন। কিন্তু সেই টাকা শোধ না দেয়ায় কয়েকদিন আগে পিতার বাড়িতে আসেন হুসনে আরা ছবি। গতকাল সকালে ওই টাকা ফেরত এবং পিতার জমিজমা ভাগাভাগি নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে গণ্ডগোল হয়। এরই মধ্যে অভিযোগ ওঠে মানসিক প্রতিবন্ধী ছোট ভাই শাহীনকে নিয়ে। তাকে নাকি পচা বাসি খাবার দেন বড় ভাই আবদুল মতিন বাবলু। এর প্রতিবাদ করেন হুসনে আরা ছবি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে গণ্ডগোলের এক পর্যায়ে দুপুরে বড় ভাইয়ের পক্ষ নিয়ে বড় বোন মিনি খাতুন ধারালো হেঁসো বসিয়ে দেন ছোট বোন হুসনে আরা ছবির মাজায়। তবে কেউ কেউ বলেছে বঁটি দিয়ে আঘাত করার কথা।

গ্রামের অনেকে জানায়, নিজে বাঁচার জন্য বোন মিনি খাতুনের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হুসনে আরা ছবিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন সংস্লিষ্ট ডাক্তার। ছবিকে মাইক্রোবাসে তুলে রাজশাহী নেয়ার উদ্দেশে রওনা হয় পরিবারের লোকজন। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের একাডেমি মোড়ে যেতে না যেতেই হুসনে আরা ছবি মারা যান। তার লাশ উদ্ধার করেছে দামুড়হুদা থানা পুলিশ। আজ লাশের ময়নাতদন্ত হতে পারে।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ জানান, হুসনে আরা ছবির স্বামী হাফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে মিনি খাতুনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। তবে খুনের ব্যাপারটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। প্রকৃত পক্ষে বোনই খুন করলো নাকি তার ওপর দায় চাপিয়ে মূল হোতা পার পেয়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।