প্রসঙ্গ: চকলেট বোমাসহ দু কিশোর গ্রেফতার

জাতীয় শোক দিবসে সারাদেশে যখন নাশকতার আশঙ্কায় বাড়তি সতর্কতা, তখন পটকা নিয়ে অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশের হেতু আইনগতভাবে হাতড়ানোটাই সঙ্গত। তবে যার বা যাদের কাছে পটকা পাওয়া গেছে তাদের বয়স অবশ্যই বিশেষভাবে বিবেচনার দাবি রাখে। অপ্রাপ্ত বয়সী তথা শিশুর জন্য দেশে পৃথক আইনও রয়েছে।
কখনও কখনও কোনো কোনো শিশুর অপরাধের মাত্রা যেমন শিশুসুলভ থাকে না, তেমনই কখনও কখনও শিশুদের দিয়ে কোনো কোনো মতলববাজচক্র মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। সে কারণে চকলেটবোমা বা পটকা নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রবেশের ঘটনাকে কেউই খাটো করে দেখছে না। যদিও দু কিশোরের একজন চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির অপরজন এমএ বারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের স্কুলব্যাগেই ছিলো পটকা। ওই ব্যাগ নিয়ে যখন অনুষ্ঠানে প্রবেশের চেষ্টা করে তখনই সেখানে থাকা মেটাল ডিটেক্টর বা বারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র শনাক্তকরণ দরজায় লালবাতি জ্বলে ওঠে। পুলিশ ব্যাগ তল্লাশি করে যখন পায় ৯টি চকলেটবোমা, তখন স্কুলছাত্র বলে- ‘স্কুলের ফুটবল দল যেদিন খেলায় নামে সেদিনই ওই পটকা তারা সংগ্রহ করে। দল জেতেনি বলেই পটকা আর ফোটানো হয়নি। ব্যাগেই থেকে গেছে।’ পুলিশ নিশ্চয় এ বক্তব্যের সত্যতা খতিয়ে দেখছে। আমাদের দেশে আতশবাজির বৈধতা নেই। পড়শি দেশ থেকে নানাভাবে তা পাচার করে এনে পাচারকারীরা দেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে দেয়। চিহ্নিত কিছু দোকানি তা বিক্রি করে। যারা ক্রেতা তাদের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। কিছু ধর্মীয় উৎসবেও ওই পটকা, আতশবাজি ফোটানো হয়। সে শব্দ নিশ্চয় মাঝে মাঝে কর্তাদের কানেও পৌঁছায়। তাছাড়া কিছু পারিবারিক অনুষ্ঠানে বা সাংগঠনিক উৎসবে বড়রাও তা সংগ্রহ করে, জ্বালিয়ে-ফুটিয়ে উল্লাস করে।
চকলেটবোমা দিয়ে বড় ধরনের কোনো নাশকতার চক্রান্ত থাকলেও যেমন দরকার ওদের মদদদাতাদের শনাক্ত করে আইনে সোপর্দ করা, তেমনই দরকার ওসবের যোগানদাতা তথা দোকানিসহ সংশ্লিষ্টদের উচিত শিক্ষা। শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে অবশ্যই শুধরানোর সুযোগ রেখে ওদের প্রতি আমাদের যত্নবান হতে হবে।