চুয়াডাঙ্গা জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত সরকারি ৪৮টি দফতরসহ উন্নয়নমূলক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা উন্নয়ন ও সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার সরকারি ৪৮টি দফতরসহ উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) আনজুমান আরা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুর রাজ্জাক, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, আলমডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজাদ জাহান, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল হাসান, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, এনএসআই উপরিচালক জাফর ইকবাল, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার, এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম ও সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আবু হাসান মোহাম্মদ ওয়াহেদসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৩ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের উপযোগী হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঢাকাগামী পরিবহনে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সদর হাসপাতালে দালাল চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওষুধের দোকানে ফেনসিডিল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের পর সদর হাসপাতালের পাবলিক টয়লেটে রাস্তা নির্মাণ ও বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হবে। উন্নয়ন কাজের জন্য জমি দরকার। পানি উন্নয়ন বোর্ড জমি ছেড়ে দেন। সরকারি শিশু পরিবারে শিশু ভর্তি করাতে আগ্রহীরা যোগাযোগ করতে পারেন। বিসিক শিল্পনগরী দ্রুত নির্মাণ হোক এটা চাই। যেভাবে পারেন বন্যার্তদের সহায়তা করি। সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে হবে। অফিসের পাশে বাউন্ডারি ওয়ালে লাইট লাগাতে হবে। সরকারি দফতরকে দখলমুক্ত করতে প্রশাসনকে জানাবেন। সোলার লাইট ব্যবহার করে দামুড়হুদা উপজেলায় আলোকিত করা হয়েছে। এটি অন্য উপজেলা অনুসরণ করতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু করতে হবে। ভিক্ষুকমুক্তকরণে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্কুল টাইমে কোচিং বন্ধ এবং স্কুলে শতকরা ৮০ ভাগ কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত না থাকলে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে অনেকগুলো বিভাগের সহযোগিতা প্রয়োজন। বিআরটিএ’র অনেক সমস্য ছিলো। ১ মাসের মধ্যে বিআরটিএ অফিস ঠিক করা হবে। এবার জেলা প্রশাসক দফতরের আওতায় চাকরিতে নিয়ম মেনে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এই নিয়োগ শতভাগ ফেয়ার করার চেষ্টা করেছি। কেউ আর্থিক লেনদেন করেছিলো কি-না জানাবেন এবং করে থাকলে টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছে। যে সকল কর্মকর্তারা ৩টি সভায় অনুপস্থি ছিলেন তাদের বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

জেলার পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দীন বলেন, যে সকল উন্নয়ন কাজ গণপূর্ত বিভাগ করছে ঠিকাদাররা নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে তদারকি করবেন। জেলায় ১৯২ জন কনস্টেবল কম আছে। ৪টি থানা ও ৩২টি পুলিশ ক্যাম্প আছে। তাতেও চুরি হয়েছে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারছি না। কাজে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবু চেষ্টা করে যাচ্ছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল হায়দার বলেন, আগামী শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের কুলপালায় সড়ক নির্মাণ কাজ করার কথা ঠিকাদার জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার বেগনগর থেকে কুলপালা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে প্রায় ৬৫ কোটি বরাদ্দ রয়েছে। আগামী জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। উন্মুক্ত আলোচনায় চুয়াডাঙ্গার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনিয়ম, যে সকল চিকিৎসকগণ জেলায় সেবা দিতে আসেন তাদের কাগজপত্র সঠিক কি-না তা খতিয়ে দেখতে হবে। চিকিৎসকদের ফিস ৭শ থেকে ৮শ টাকা নেয়া হয়। এগুলো সঠিকভাবে তদারকি করা দরকার। ডুগডুগি পশুহাটের কাছে রাস্তার সাথে একটি দোতলা বিল্ডিং আছে তা অপসারণ করা দরকার। এছাড়া বিজিবি সড়কে ৪টি স্পিডব্রেকারসহ অসংখ্য স্পিড ব্রেকার রয়েছে। এগুলো অপসারণ করা দরকার। বিএডিসি যেসকল খাল পুনঃখনন করেছিলো তা দখল হতে চলেছে। সেগুলো দখলমুক্ত করা দরকার। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিবছর ঢাকাগামী পরিবহনগুলো নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১শ থেকে ৩শ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।