চলে গেলেন নায়করাজ রাজ্জাক

স্টাফ রিপোর্টার: সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার অভিনয় জীবনের সূচনা হয়েছিলো মঞ্চনাটকের মাধ্যমে। অভিনয় করেছিলেন কোলকাতার খানপুর হাইস্কুলের সরস্বতী পূজার নাটকে। সেই থেকেই অভিনয়ের বীজটি গেঁথে যায় তার মননে। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অভিনয় করেন ঘরোয়া নামের টেলিভিশন নাটকে। তেরো নম্বর ফেকু ওস্তাগড় লেন চলচ্চিত্র ছোট্ট একটি চরিত্রের মাধ্যমে পদার্পণ করেন সেলুলয়েডে। রুপালি পর্দায় ওই ছোট্ট চরিত্রটিই নজর কেড়ে নেয় সবার। জহির রায়হানের বেহুলা চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন নায়কের চরিত্রে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। হয়ে ওঠেন বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকদের নয়নমণি। অনবদ্য অভিনয়শৈলীতে হাসি-কান্নায় রুপালি দর্শককে বিভোর করে রেখেছেন দীর্ঘ ছয় দশক। পেয়েছেন নায়করাজ উপাধি। আপন মেধায় অর্জন করেছেন পাঁচটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বাংলা চলচ্চিত্রের সেই কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী রাজ্জাক এবার পর্দার বাইরে বাস্তবিক জীবনে কাঁদালেন কোটি ভক্ত-অনুরাগীকে। সোমবার ঘটলো তার মহাপ্রস্থান। এদিন না ফেরার ভুবনে পাড়ি জমান বাংলা চলচ্চিত্রের এ কিংবদন্তি অভিনয়শিল্পী। সন্ধ্যা ছয়টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। রেখে গেছেন দুই ছেলে চলচ্চিত্র অভিনেতা বাপ্পারাজ ও সম্রাট, দুই মেয়ে এবং স্ত্রী রাজলক্ষ্মীকে।

ইউনাইটেড হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত অবস্থায় নায়ক রাজ্জাককে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব ধরনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ৬টা ১৩ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত আটটা) রাজ্জাককে কখন কোথায় সমাহিত করা হবে, সে বিষয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়নি।

নায়করাজ রাজ্জাকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে শিল্প-সংস্কৃতি ভুবনে। তার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক প্রকাশ করেন। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, সংষ্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। নায়করাজের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে চলচ্চিত্রের সহকর্মীসহ সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেকেই হাজির হন হাসপাতালে। নায়করাজের মৃত্যুর খবর মিডিয়াকর্মীদের কাছে শুনে হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন রুপালি পর্দায় তার নায়িকাদের মধ্যে অন্যতম সারাহ বেগম কবরী। এ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তিনি বলেন, খুবই কষ্ট হচ্ছে, কান্না পাচ্ছে আমার। এ স্বল্প কথার পর কান্নায় রুদ্ধ হয়ে যায় তার কণ্ঠ। তিনি আর কোনো কথাই বলতে পারেননি। মুঠোফোনের ওপাশ থেকে শুধুই শোনা গেলো কান্নার ধ্বনি।

চলচ্চিত্রের সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন রাজ্জাক। তাই বার্ধক্যকে উপেক্ষা করে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট যে কোন কর্মকাণ্ডের সরব ছিলেন রাজ্জাক। আমৃত্যু এ শিল্পের সাথেই থাকতে চাওয়ার কথা জানিয়ে এক সময় বলছিলেন, আমি রাজ্জাক হয়তো অন্য কোনো চাকরি করতাম অথবা ঘুরে বেড়াতাম। কিন্তু ছোটবেলার অভিনয় চেষ্টাকে আমি হারাতে দিইনি। আমি নাটক থেকে চলচ্চিত্রে এসেছি। সবাই আমাকে চিনেছে। পেয়েছি সাফল্যও। বাংলার মানুষজন আমাকে একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবেই দেখেন ও আমাকে ভালোবাসেন। আজকে আমার যা কিছু হয়েছে, সবই এই চলচ্চিত্র শিল্পের কল্যাণে।

বাংলা চলচ্চিত্রে রাজ্জাক-করবী জুটি পেয়েছিলো তারকা খ্যাতি। সুভাষ দত্ত পরিচালিত আবির্ভাব চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে নতুন জুটি রাজ্জাক-কবরীর। একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেছেন তারা। উপহার দিয়েছেন সুপারহিট নানা চলচ্চিত্র। নীল আকাশের নীচে, ময়নামতি, ক খ গ ঘ ঙ, ঢেউ এর পরে ঢেউ ইত্যাদি চলচ্চিত্র স্বাধীনতার আগে ঢাকাইয়া ছবির জগতে পেয়েছিলো বিপুল জনপ্রিয়তা। স্বাধীনতার পর এ জুটি কাজ করে অনেক চলচ্চিত্রে। তখন রংবাজ, বেঈমানসহ বেশকিছু চলচ্চিত্র উপহার দেন এ জুটি।

বাংলা চলচ্চিত্রকে রাঙিয়ে দেয়া, স্বর্ণালী যুগের নায়ক রাজ্জাকের জন্মই হয়েছিলো সিনেমাপাড়ায়, কোলকাতার টালিগঞ্জে। ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন সিনেমার শুটিং, তারকা নায়ক-নায়িকাদের। খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট নানা কিছু। ফলে অল্প বয়সেই অভিনয়ের বাসনা বাসা বাঁধে তার হৃদয়ে। স্বপ্ন দেখা শুরু তখন থেকেই। কিশোর বয়সেই জড়িয়ে পড়েন মঞ্চনাটকে, জড়িয়ে পড়েন অভিনয়ের ঘোরলাগা জগতে। তখন টালিগঞ্জের সিনেমাশিল্পে উত্তম কুমার, সৌমিত্র, ছবি বিশ্বাস প্রমুখ খ্যাতিমানদের উড়ন্ত যুগ। তাদের চলচ্চিত্র দেখেন, আর রাজ্জাক দিনরাত স্বপ্ন দেখেন। কোলকাতায় হালকা-পাতলা সাধারণ এক ছেলে রাজ্জাকের অভিনয়ের সুযোগ মিললো না। কেন জানতো সেই লিকলিকে ছেলেটিই জয় করে নেবেন বাংলাদেশের হৃদয়?

রাজ্জাকের মনে যখন চলচ্চিত্রে অভিনয়ের দুর্নিবার স্বপ্ন, তখনই কোলকাতায় শুরু হয় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। কোলকাতায় থাকাটাই তার জন্য মুশকিল হয়ে পড়লো। তখন এক সুহৃদের পরামর্শে চলে আসেন বাংলাদেশে, ঢাকায়। সেটা ১৯৬৪ সালের কথা। ঢাকায় পা রেখেই রাজ্জাক পেতে শুরু করেন বিপুল গ্রহণযোগ্যতা। কোলকাতা তাকে বিমুখ করেছিলো, ঢাকা তাকে দু হাত ভরে দিলো। এ দেশের মানুষ তাকে ভালোবেসে আপন করে নিলো। বাংলাদেশে অল্প সময়েই তিনি পান খ্যাতি, বিপুল মানুষের ভালোবাসা। পরে সময়ের পরিক্রমায় হয়ে উঠেছিলেন নায়করাজ।

চিরসবুজ নায়ক রাজ্জাকের প্রকৃত নাম মো. আবদুর রাজ্জাক। আকবর হোসেন ও মিনারুন্নেসার ছোট ছেলে আবদুর রাজ্জাক টালিগঞ্জের মোল্লাবাড়িতে ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করেন লক্ষ্মীকে। তাদের সংসারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দুই ছেলে বাপ্পারাজ ও সম্রাট চলচ্চিত্রের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন।

১৯৬৪ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে রাজ্জাক স্ত্রী ও ছেলে বাপ্পাকে নিয়ে চলে আসেন ঢাকায়। যোগাযোগ করেন ঢাকায় প্রথম ছবি মুখ ও মুখোশের পরিচালক আবদুল জব্বার খানের সাথে। তিনি রাজ্জাককে ওই সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা ইকবাল ফিল্মসে চাকরি নিয়ে দেন। পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারীর কাজ। সহকারী পরিচালক হিসেবে রাজ্জাকের প্রথম ছবি উজালা। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি ১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন, আখেরী স্টেশন ও ডাক বাবু ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। বরেণ্য চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের সহকারী হিসেবেও কাজ করেন। এ সময় সুযোগ পান নায়ক হওয়ার। জহির রায়হান রত্ন চিনতে ভুল করেননি। রাজ্জাককে তিনি নায়ক বানান, সুযোগ দেন তার বেহুলা চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ের। বেহুলার নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন সুচন্দা। ১৯৬৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বেহুলা সুপারহিট হয়। আর রাজ্জাক সুযোগ পেয়ে যান তার আজন্ম লালিত স্বপ্ন পূরণের। ঢাকার চলচ্চিত্র পায় একজন রোমান্টিক নায়ক, যিনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সিনেমাশিল্পের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। চলচ্চিত্রমোদীদের উপহার দেন অসংখ্য কালজয়ী চলচ্চিত্র। অভিনয়ের পাশাপাশি নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৭৬ সালে আশঙ্কা ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এ পর্যন্ত ২০ চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছেন তিনি। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬ চলচ্চিত্র। পরিচালক হিসেবেও তিনি সফল হয়েছেন। সর্বশেষ তিনি আয়না কাহিনী ছবিটি নির্মাণ করেন। ছুটির ঘণ্টা, রংবাজ, বাবা কেন চাকর, নীল আকাশের নিচে, জীবন থেকে নেওয়া, পিচঢালা পথ, অশিক্ষিত, বড় ভালো লোক ছিলো, অনন্ত প্রেমসহ অসংখ্য জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক। সর্বশেষ অভিনয় করেছেন ছেলে বাপ্পারাজ পরিচালিত কার্তুজ ছবিতে।

নায়করাজ রাজ্জাক প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন কি যে করি ছবিতে অভিনয় করে। এরপর আরও চারবার তিনি জাতীয় সম্মাননা পান। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্যবার। এছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। ব্রিটিশ আমলে তৎকালীন ভারতবর্ষে জন্ম নেয়া এ শিল্পী বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি অভিনয় করেছেন উর্দু চলচ্চিত্রে। সব মিলিয়ে তার অভিনীত চলচ্চিত্রের সংখ্যা তিন শতাধিক। অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ছবি প্রযোজনা ও পরিচালনায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন এ কিংবদন্তী শিল্পী।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন।

চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের অনুভূতি: বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, রাজ্জাক ভাই শুধুমাত্র একজন বড়মাপের অভিনেতাই ছিলেন না, বড় মনের মানুষ ছিলেন। এই মুহূর্তে তার চলে যাওয়ায় আমরা চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবককে হারালাম। অভিনেতা আলীরাজ বলেন, রাজ্জাক ভাই আমার চলচ্চিত্রের গুরু। আমার বলার কিছুই নেই। একজন সন্তানের পিতা মারা গেলে যেমন লাগে আমার তেমনই লাগছে।

চিত্রনায়ক সোহেল রানা বলেন, প্রত্যেকের মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী। প্রায় ৪৪ বছর ধরে একসাথে কাজ করেছি। যদিও তিনি আমার অল্প সিনিয়র ছিলেন। যে মুহূর্তে আমাদের দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গন ঘোলাটে অবস্থার মধ্যে আছে, সেই মুহূর্তে রাজ্জাক ভাইয়ের চলে যাওয়া বড় রকমের শূন্যতার সৃষ্টি হলো। আমি তার সহশিল্পী হিসবে বলতে পারি, আমাদের নিজেদের মধ্যে চলচ্চিত্রের ব্যাপারে সমঝোতা ছিলো। কোনটা ভালো কোনটা মন্দ এ নিয়ে আলোচনা হতো। শেষ দিন পর্যন্ত কে বড় কে ছোট সেটা নিয়ে কোনোদিন আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়নি। একজন বড় অভিনেতার সব গুণ তার ভেতর ছিলো। তিনি যেখানে যান না কেন সৃষ্টিকর্তা যেন তাকে ভালো রাখেন।

চিত্রনায়িকা ববিতা বলেন, আমি চলচ্চিত্রে এসেছি রাজ্জাক ভাইয়ের হাত ধরেই। সেই হিসেবে তার সাথে আমার পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। আমি তাকে শুধুমাত্র একজন নায়ক হিসেবে দেখিনি কখনও, একজন অভিভাবক মনে করতাম। অসংখ্য ছবি করেছি তার সাথে। তিনি আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের এক ইনস্টিটিউশন। তার পরিচালিত প্রথম ছবি অনন্ত প্রেম। সেই ছবিতে তিনি আমাকে নিয়েছিলেন। প্রায় ৪০টি ছবিতে তার সাথে কাজ করেছি। হঠাৎ করে তার এ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। তিনি আমার বন্ধু, অভিভাবক সবকিছুই।

চিত্রনায়িকা চম্পা বলেন, রাজ্জাক ভাইয়ের হঠাৎ করে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না। শুনেছি সকালে তিনি নামাজ পড়েছিলেন। আমাদের চলচ্চিত্রের একজন অভিভাবক চলে গেলেন। ওনার চেয়ে বয়সে বড় অনেকে এখনও চলাফেরা করছেন, কিন্তু তিনি আমাদের মাঝে নেই, ভাবতে পারছি না। তিনি শুধুমাত্র অভিনয় জীবনে নয়, ব্যক্তিজীবনেও অনেক উপদেশ দিতেন। এ অভাব পূরণ হওয়ার নয়।

চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, সবাই একদিন মারা যাব। রাজ্জাক ভাই চলচ্চিত্রের একজন পথিকৃৎ ছিলেন। তার চলে যাওয়া খুবই শোকের বিষয়। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন।