কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্র হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি বন্দুকযুদ্ধে নিহত

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্র সাগরকে অপহরণের পর হত্যা করার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা এক ব্যক্তি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার ভোররাত চারটার দিকে সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর বেড়িবাঁধ এলাকার একটি কলাবাগানে কথিত এ বন্দুকযুদ্ধ হয়।

পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, তিনটি গুলির খোসা ও দুটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশের তিন কনস্টেবল আহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম এনামুল হক (৩০)। তিনি সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে। কলেজছাত্র সাগর সাহাকে (১৯) অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে গত শনিবার এনামুলকে আটক করেছিলো পুলিশ।

কুষ্টিয়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছাব্বিরুল আলম জানান, সাগরকে অপহরণের পর হত্যায় জড়িত সন্দেহে এনামুলকে আটক করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর সে তার সহযোগীদের তথ্য দেয়। তাকে সাথে নিয়ে রাতে হরিনারায়ণপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। উপস্থিতি টের পেয়ে সেখানে অবস্থানরত অপহরণকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। উভয়পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ধরে বন্দুকযুদ্ধ চলে। পুলিশের ওপর হামলাকারীরা একপর্যায়ে পালিয়ে যায়। বন্দুকযুদ্ধের মাঝে পড়ে এনামুল আহত হন। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসা কর্মকর্তা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী প্রদীপ সাহার ছেলে সাগরকে গত বুধবার সন্ধ্যায় স্থানীয় হরিনারায়ণপুর বাজার থেকে অপহরণ করা হয়। পরে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তার বাবাকে ফোন করা হয়। সাগর লক্ষ্মীপুর খাতের আলী ডিগ্রি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয়বর্ষের ছাত্র ছিলেন। অপহৃত হওয়ার তিন দিন পর গত শনিবার রাতে শিবপুর গ্রামের পরিত্যক্ত একটি শৌচাগারের ভেতর থেকে সাগরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা পুলিশের শীর্ষস্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, সাগর অপহৃত হওয়ার পর পুলিশ এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে। এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় জানা যায়, শিবপুর গ্রামের এনামুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ির পেছনে সাগরের লাশ ফেলে রাখা হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে পরিত্যক্ত একটি শৌচাগার থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগেই এনামুলকে আটক করা হয়। গত রোববার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে সাগরের লাশের ময়নাতদন্ত হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক তাপস কুমার সরকার জানিয়েছেন, হাত-পা বেঁধে ও গলায় রশি পেঁচিয়ে সাগরকে হত্যা করা হয়েছে। অপহরণের দিন রাতেই তাকে হত্যা করা হয়।