চুয়াডাঙ্গায় সুচিকিৎসার পথে অন্তরায় অপসারণ প্রয়োজন

আজ হাতে চোট পাওয়া রোগী চিকিৎসা নিয়ে সংজ্ঞাহীন, কাল সিজার করানো রোগীর ক্ষতস্থানে পচন। চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল সড়কের একটি বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে এ ধরনের অভিযোগের অন্ত নেই। এরপরও স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্তাদের সেদিকে নজর নেই। অভিযোগের অংশবিশেষ পত্রস্থ হলেও তাতে দৃষ্টি পড়ছে বলে মনে হচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গার এই যখন দশা, তখন সুচিকিৎসার নিশ্চয়তা কোথায়? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে প্রশ্ন উত্থাপনও বাতুলতা।
ক’দিন আগে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড়ের এক মধ্যবয়সী নারী হোঁচট খেয়ে পড়ে হাতে চোট পান। তিনি চিকিৎসার জন্য সরকারি সদর হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হলেও শেষ পর্যন্ত পৌঁছান ওই বেসরকারি হাসপাতালে। যে চিকিৎসা দেয়া হয় তা ওই রোগীর সুস্থতা দূরাস্ত সংজ্ঞা হারিয়ে ভর্তি হতে হয় সদর হাসপাতালে। হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ওই বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের চিকিৎসকের দেয়া ব্যবস্থাপত্রে লেখা চিকিৎসা দেখে চমকে উঠে বলেন, সর্বনাশ! ওই চিকিৎসা দেয়া ঠিক হয়নি। তিনি অবশ্য চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন। এ ঘটনার জের যেতে না যেতে, একই বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবাদান কেন্দ্রে এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার করে সন্তান প্রসবের পর সন্তান তো বাঁচানোই যায়নি, প্রসূতির অবস্থা এখন আশঙ্কাজনক অবস্থায়। তিনি অসহনীয় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। চুয়াডাঙ্গা সদর আধুনিক হাসপাতালের সার্জিক্যাল কনসালটেন্ট রোগীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে বলেছেন, ওই রোগীর ক্ষতস্থানে পচন। পুনরায় অপারেশন করতে হতে পারে। তবে কি সন্তান প্রসবের সময়ই চিকিৎসায় ত্রুটি ছিলো? অবস্থাদৃষ্টে তদন্তের দাবি যুক্তিযুক্ত। ক্ষতিগ্রস্তের ক্ষতিপূরণ, দায়ীর দ- চাওয়া অবশ্যই অবান্তর নয়। ন্যায় চাওয়া অন্যায়ের আড়ালে ধামাচাপা পড়ে থাকার কারণেই সমাজে ভুল কিংবা অপচিকিৎসা পাচ্ছে ব্যাপকতা।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্বীকৃত সনদধারী তথা রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের দেয়া চিকিৎসার ত্রুটিধরা সাধারণ মানুষের কাজ নয়। তবে অভিযোগ উত্থাপনের এখতিয়ার রয়েছে। যখন ত্রুটির বিষয়টি সামনে চলে আসে তখন অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। যদিও অভিযোগের সিংহভাগই রাস্তার পাশে ক্ষোভে রূপান্তর হয়ে ধুলোয় মেশে। কিছু অভিযোগ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ পেলেও তদন্তের তেমন নজরি মেলে না। ফলে প্রতিকারের প্রত্যাশাও হয়ে উঠেছে অবান্তর।
পুনশ্চঃ জেগে ওঠো ওগো আশাজাগানীয়া….