কাঁচামরিচের দাম আকাশ চুম্বি : বেড়েই চলেছে সবজির দাম

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: কাঁচামরিচের ঝালে নাকাল ক্রেতারা। চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহসহ দেশের অধিকাংশ এলাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানে দাম আরও বেশি। শুধু কাঁচামরিচই নয়, সব ধরনের সবজির দামও বেড়েছে। বাজারে ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজি নেই বললেই চলে। এছাড়া চালের দাম কিছুটা কমলেও এখনো মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। ফলে ভালো নেই স্বল্প আয়ের মানুষ।

সবজি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশে উত্পাদিত কাঁচামরিচ দিয়েই ভোক্তাদের চাহিদা মেটে। কিন্তু এ বছর বন্যা ও অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক সবজিক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কাঁচামরিচের যোগান কমে গেছে। ফলে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু দুর্গাপূজা উপলক্ষে ছয় দিন বেনাপোলসহ অন্যান্য স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি বন্ধ ছিলো। এ সময়ে ভারত থেকে কাঁচামরিচ আসেনি। দাম বাড়ার এটাও একটা কারণ বলে ব্যবসায়ীরা জানান। তবে গত মঙ্গলবার থেকে বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাই কাঁচামরিচের দাম শিগগির কমতে শুরু করবে। এদিকে চুয়াডাঙ্গা সাতগাড়ির চাষি জামাত আলী বলেছেন, এবার ঝালের আবাদ অতি বর্ষনে নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে ঝালের দাম বেড়েছে। আর দাম বৃদ্ধির কারণে এলাকার অনেক ঝাল চাষি রাতে তাদের ঝাল ক্ষেত পাহারা দিতে বাধ্য হচ্ছে।

সরোজগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারে আমদানি কমে যাওয়ায় মরিচের ও সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার সরোজগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৫ দিনের ব্যবধানে ৪০ টাকার বেগুন ৬০ টাকায় ১শ টাকার কাঁচা মরিচ ১৬০, ২০ টাকার কাঁচ কলা ৩০ টাকায়, শিম ১২০, কচু ২০, আলু ১৮, পটোল ৩০, রসুন ১শ, মুলা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া মাছ ও মাংসের বাজার আগের মতো রয়েছে। বাজারে সবজির দামসহ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ ।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছের, ঝিনাইদহের বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের কেজি ২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচাবাজারে টানা দু সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের ঝাঁঝে নাজেহাল হয়েছে ক্রেতা সাধারণ। শনিবার খুচরা বাজারে এক পোয়া কাঁচা মরিচ (২৫০ গ্রাম) ৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অর্থাত প্রতিকেজি ২শ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন দেশে সাম্প্রতিক অকাল বন্যায় মরিচের খেতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দেশীয় কাঁচা মরিচের ফলনও কম। আগামী দু তিন সপ্তাহ লাগবে দেশী মরিচের নতুন ফলন বাজারে আসতে। অবশ্য বাজারে গতকাল প্রথম ভারতীয় আমদানিকৃত কাঁচামরিচ ঢুকেছে। দুর্গাপূজার বন্ধের কারণে অন্তত ১৫ দিন আমদানি বন্ধ ছিলো।

বাজারে ভারতীয় মরিচের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন আগামী দু তিনদিনের মধ্যে কাঁচা মরিচের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ঝিনাইদহ সদরের ওয়াবদা কাঁচা বারের দৈনিক বাজারের ব্যবসায়ী পরেশ সরকারের কছে কাঁচা মরিচের এতো দাম বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি জানান, বাজারে মরিচের সঙ্কট থাকায় বেশি দরে কিনে আনা হয়েছে, যার কারণে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ঝিনাইদহের বাজারের বেশ কয়েকজন ক্রেতা ক্ষোভের সাথে জানান, একে তো চালের বাজারে আগুন তারপরও কাঁচা মরিচের এতো দাম কল্পনায় করা যায় না। অবশ্য ক্রেতারা বলেন, বাজার মনিটরিং না থাকায় যে যার ইচ্ছে মতো দাম হাঁকিয়ে যাচ্ছে। আমরা যাব কোথায়? বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তিনি তার বক্তব্য দিতে রাজি হননি।